তিস্তা চুক্তি ‘হয়েছে’, বাস্তবায়ন বাকি: সুরঞ্জিত

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, তিস্তা সমস্যার সমাধানে চুক্তি হয়েছে। তার বাস্তবায়নের বিষয়টি শুধু বাকি আছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2014, 05:37 PM
Updated : 21 April 2014, 05:46 PM

সোমবার রাজধানীর রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। তিস্তা অভিমুখে বিএনপির লংমার্চেরও সমালোচনা করেন তিনি।

২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

এরপর বিভিন্ন সময়ে চুক্তি স্বাক্ষরে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারে পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এ চুক্তি।

ভারতে চলমান জাতীয় নির্বাচনে নতুন সরকার আসলে তাদের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের বিষয়ে আলোচনার কথা ওঠার মধ্যেই চুক্তি নিয়ে একথা বললেন সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত। 

তিনি বলেন, “তিস্তা সমস্যার সমাধানে চুক্তি হয়েছে। তার বাস্তবায়নের বিষয়টি শুধু বাকি আছে। যখন চুক্তি হয়েছিল তখন পশ্চিম বাংলার ক্ষমতাসীন সরকারের কারণে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

“ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের পর নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলের স্বার্থেই এই চুক্তির বাস্তবায়ন করতে হবে।”

তিস্তা অভিমুখে লংমার্চের ডাক দেয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জাতীয় স্বার্থে নয়, আসলে তিনি তিস্তার পানি নিয়ে রাজনীতি করতে চান এবং সূক্ষ্ম ভারত বিরোধিতার জন্যই লংমার্চ করছেন।”

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে এই লংমার্চ কোনো ‘কার্যকর ভূমিকা’ রাখতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন সুরঞ্জিত।

‘ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, বরং জনকল্যাণে এই লংমার্চ’ বলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি নাকচ করে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “সরকারি দল ও বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে খালেদা জিয়া অনেকবার ভারত সফর করেছেন। কিন্তু জাতি কখনো শোনেনি তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে ফারাক্কা-তিস্তা সমাধানে কোনো আলোচনা করেছেন।

“যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে এলেন, তিস্তা নিয়ে আলোচনা হল তখন তিনি বলতে পারতেন, এই ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিচ্ছেন। কাজেই তিনি সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারতেন!”

ফাইল ছবি

সুরঞ্জিত বলেন, “লংমার্চ করে কখনো সমস্যার সমাধান হয় না। ফারাক্কা অভিমুখে বহুবার লংমার্চ হয়েছে, কিন্তু পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় হয়নি। সমঝোতা ও কূটনৈতিক উদ্যোগই একমাত্র সমাধান।”

তিনি বলেন, “এই মুহুর্তে তিস্তার পানিকে রাজনৈতিক ইস্যু করা বিএনপির ঠিক হয়নি। যাই হোক, লংমার্চ করতে চাচ্ছেন করুন। তবে মনে রাখবেন, যতক্ষণ এই লংমার্চ শান্তিপূর্ণ থাকবে ততোক্ষণ ঠিক আছে।

“যদি একে ভায়োলেন্ট করতে চান, তাহলে জনগণের জানমাল রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হবে।”

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু একাডেমির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।