এই সরকার বেশিদিন টিকবে না: খালেদা

এই সরকার বেশিদিন ‘টিকবে না’ মন্তব্য করে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2014, 11:19 AM
Updated : 19 April 2014, 11:49 AM

আলোচনার কথা বলার পাশাপাশি বিদায় নেয়ার পর সব কর্মকাণ্ডের হিসাব নেয়া হবে বলেও আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন।

দেশের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “এরশাদকে নিয়ে জোর করে অবৈধভাবে আজীবন থাকা যাবে না। সরকারকে বলব, আপনাদের হাতে সময় খুব কম।

“বেশিদিন এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। বিদায় নিতেই হবে।বিদায়ের পর সব কর্মকাণ্ডের হিসাব-কিতাব হবে।’’

ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে আলোচনার জন্য সরকারকে আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

“সরকার বলব, গুম-খুন বন্ধ করুন। আসুন সকলে মিলে আলোচনা করে একসঙ্গে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করি। অতীতেও আমরা আলোচনা করেছি। আগামীতেও করব।”

সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর খালেদা দল গুছিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেন খালেদা। এরপর শ্রমিক দলের মধ্য দিয়ে প্রথম বিএনপির কোনো সহযোগী সংগঠনের কাউন্সিল হচ্ছে।

কাউন্সিলে বক্তব্যে নতুনদের নেতৃত্বে আনার পরামর্শ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেইসঙ্গে প্রবীণদের উপদেষ্টা হিসেবে রাখতে বলেন তিনি। 

সরকারের সমালোচনা করে খালেদা বলেন,“দেশে গণতন্ত্র নেই। আমাদের কথা বলার অধিকার নেই। পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য লং মার্চ করব, সেখানেও বাধা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে।”

আগামী ২২-২৩ এপ্রিল তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে লং মার্চের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।

খালেদা বলেন, “ওদিকে (ভারত) বাঁধ নির্মাণের ফলে আমাদের দেশের প্রতিটি নদ-নদীর পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে, শুকিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা নদীতে পানি নেই। মেঘনা ও যমুনারও একই অবস্থা। এই পানির জন্য অবশ্যই আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে।”

স্থায়ীভাবে পানি সংরক্ষণের জন্য বিকল্প পথ খুঁজে বের করার কথাও বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

“আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পানি সমস্যার সমাধানে বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। পানিকে সারাবছর ধরে রাখার ব্যবস্থা হবে। শুকিয়ে যাওয়া নদী খননের মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে।”

গুম-খুনের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, “এই সরকার অনেক মানুষকে হত্যা করেছে। বিডিআর পিলখানা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে তাদের হাত নানা হত্যায় রঞ্জিত। সময়মতো এসব হত্যার বিচার হবেই।

“ছাত্রলীগের গুণ্ডাবাহিনীর কাছে অন্ত্র বেশিদিন থাকবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে আমাদের (বিরোধী দল) দিকে অন্ত্র তাক করে রাখা হয়, জনগণ রাস্তায় নামলে ওই অস্ত্র আপনাদের দিকে ঘুরে দাঁড়াবে।”

৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ‘সঠিক’ ছিল বলে আবারো দাবি করেন খালেদা।

বিএনপিকে ‘মুক্তিযুদ্ধের’ দল দাবি করে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। আর আওয়ামী লীগের নেতারা থিয়েটার রোডে (কলকাতার) ছিলেন।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের একটি বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “গতকাল লন্ডনে এক সভায় সৈয়দ আশরাফ সাহেব বলেছেন, তিনি একাত্তর সালে জিয়াউর রহমানের ক্যাম্পে ট্রেনিং নিয়েছেন।

“আওয়ামী লীগের যারা জিয়াউর রহমান না কি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না বলে বক্তব্য দিচ্ছেন, সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা মিথ্যাচার করছেন।”