হাসিনা বললেন, বিএনপি ‘অবৈধ’

বঙ্গবন্ধুকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলে তারেক রহমানের বক্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে বিএনপিকে ‘অবৈধ দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2014, 04:44 PM
Updated : 12 April 2014, 04:51 PM

শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “হাই কোর্টের রায়ে জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিও অবৈধ।

“আমাদের দুর্ভাগ্য সে অবৈধ দল থেকে ছবক শুনতে হয়। যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদেরকে হেয় করার চেষ্টা হয়।”

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক গত ৮ এপ্রিল লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের ‘প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’।

গত মাসে এক অনুষ্ঠানে জিয়াকে বাংলাদেশের ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বলার পর সমালোচনার মধ্যেই তারেক বঙ্গবন্ধুকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলেন, এজন্য তাকে ‘আহাম্মক’ বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

হাসিনা বলেন, “বিএনপি-জামাত জোট স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত উল্টা-পাল্টা আজে-বাজে কথা বলত না।

“তাদের এত বড় দুঃসাহস মুক্তিযুদ্ধ এবং যে সংবিধান সারা বিশ্বের মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে, তা নিয়ে কটাক্ষ করে।”

“তারা হাই কোর্টের রায় মানে না, প্রথম রাষ্ট্রপতি নিয়ে কে প্রশ্ন উঠালো? যার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন মেজর ছিলেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমোশন দিয়ে মেজর জেনারেল করেছিলেন।”

“অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী খন্দকার মোশতাকের হাতে জিয়া হলেন সেনা প্রধান। সেনা প্রধান হয়ে তাহের, খালেদ মোশাররফসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে জিয়া।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “খন্দকার মোশতাককে বিদায় দেয়ার পর সায়েম সাহেবকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। পরে তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজেকে নিজে রাষ্ট্রপতি বানান জিয়া।

“আর্মি রুল ও সংবিধান ভঙ্গ করে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন।”

ইতিহাস বিকৃতি ঠেকাতে সরকার সচেষ্ট জানিয়ে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।  

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সরকার প্রধান বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।

“আমরা চেয়েছি, নির্বাচনগুলো যাতে যেন-তেন মতো না হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামাত সব সবদলের সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে আসতে পেরেছে।”

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রতিটি উপজেলার জন্য আলাদা মহাপরিকল্পনা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি; যাতে আবাদি জমির ক্ষতি না করে কোথায় হাসপাতাল হবে, কোথায় বিদ্যুৎ যাবে, কোথায় স্কুল প্রতিষ্ঠিত হবে, তা নির্দিষ্ট করা থাকবে।

‘লাখো কণ্ঠে আমার সোনার বাংলা’ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান করে নেয়ায় সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে টুঙ্গীপাড়ার নতুন উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান অসীম কুমার বিশ্বাস, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা বেগম মিমি বক্তৃতা করেন।