আন্দোলনের জন্য আরো সময় নিলেন খালেদা

উপজেলা নির্বাচনের পর আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেয়া খালেদা জিয়া এখন বলছেন,সংগঠন জোরদারের পর ‘সময়মতোই’ কর্মসূচি দেয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2014, 10:23 AM
Updated : 12 April 2014, 11:33 AM

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষের পক্ষকাল পর তিনি শনিবার শ্রমিক দলের এক অনুষ্ঠানে বলেন, “অন্যান্য সংগঠনকে নতুনভাবে পুনর্গঠন করা হবে। সংগঠন জোরদার করেই যখন সময় হবে, তখনি আমরা রাজপথে নামব।”

আন্দোলনের জন্য সময় নেয়ার কথা বললেও আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

“এখনো সময় আছে, আলোচনার মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যেভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছেন, দেরি করলে যে কোনো পরিণতির জন্য আপনারাই দায়ী থাকবেন।”

বিএনপির বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পর আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন খালেদা।

আওয়ামী লীগ নেতারা সে দাবি প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন সংগঠনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর শাখার কাউন্সিলে খালেদা বলেন, “বিএনপি আন্দোলন করছে না, এটা ঠিক নয়।”

আন্দোলন সংগঠনের প্রস্তুতি হিসেবে দলের বিভিন্ন শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের কাউন্সিলের কথা তুলে ধরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শুধু হাতে তালি কিংবা স্লোগান দিলে চলবে না। কাজ করতে হবে, যারা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রাখতে পারবে, ঝুঁকি নিতে পারবে ও রাজপথে থাকতে পারবে, তাদের দিয়ে নতুন কমিটি করুন।

“ভাই-বোন কিংবা বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা চিন্তা করে নেতৃত্ব নির্বাচন করলে চলবে না। এতে কাউন্সিলের উদ্দেশ্য মূল্যহীন হয়ে পড়বে।”

৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল দাবি করে নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করতে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের সংসদ নির্বাচন বর্জনের কথা নে করিয়ে দেন খালেদা।

আন্দোলনের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী ১৯ এপ্রিল শ্রমিক দলের কাউন্সিল হবে। ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন কমিটিও শিগগিরই হবে। অন্যান্য সংগঠনগুলোও নতুনভাবে সাজানো হবে।

সব সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব আনার নির্দেশ দিয়ে খালেদা বলেন, “এসব কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বকে নিয়ে আমরা আগামী দিনে অবৈধ ও জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।”

আওয়ামী লীগ ‘লুটপাট’ চালিয়ে দেশকে ‘নিঃশেষ’ করে দিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, জনগণ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

“কঠিন ও শক্তভাবে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এভাবে দেশ চলতে পারে না, চলতে দেয়া যায় না।”

উপজেলা নির্বাচনে প্রথম দুই পর্যায়ে বিএনপির সাফল্য দেখে কারচুপি করে পরের পর্বগুলোতে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থীদের হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এরশাদ একজন বেঈমান, মুনাফেক। তাকে জনগণ বিশ্বাস করে না, বিদেশিদেরও আস্থা নেই। সরকার তাকে আবার বিশেষ দূত বানিয়েছে। তাকে দিয়ে কী দূতিয়ালি হবে?”

শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. রেহান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, শ্রমিক দলের নির্বাহী সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, সহসভাপতি মজিবর রহমান সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ।

ঢাকা মহানগর শ্রমিক দলের এটি ষষ্ঠ কাউন্সিল, সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০০৫ সালে।

দিনব্যাপী কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিকালে কর্মঅধিবেশনে মহানগরে নতুন নেতৃত্বে নির্বাচন হবে।

কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মঈন খান, আবদুল মান্নান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, আবদুল মালেক, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।