ববি হাজ্জাজ হঠাৎ লন্ডনে, র‌্যাবকে জড়িয়ে গুঞ্জন

আকস্মিক যুক্তরাজ্যের পথে উড়াল দেয়া ববি হাজ্জাজ এক ফেইসবুক পোস্টে দাবি করেছেন, ‘২০ ঘণ্টা আটকে রাখার পর হুমকির মুখে’ তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2013, 09:30 AM
Updated : 18 Dec 2013, 05:20 AM

অবশ্য র‌্যাব বলছে, এ বিষয়ে তাদের ‘কিছুই’ জানা নেই।

জাতীয় পার্টি রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি উইংয়ের কমিউনিকেশনস অফিসার তারেক মোরতাজা  মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনি লন্ডনে গেছেন। কি কারণে গেছেন আমি তা জানি না।”

তবে ববির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, দুদিন আগে র‌্যাব কর্মকর্তারা ববির বাসায় গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়। এরপর সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এরশাদের এই উপদেষ্টা। 

একই দিনে ববি হাজ্জাজের নামে এক ফেইসবুক পেইজে বলা হয়, তাকে ২০ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখা হয়েছে। সব বিবৃতি প্রত্যাহার করে আড়ালে যেতে বলা হয়েছে। তা না হলে সরকারের রোষানলের মুখোমুখি হওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। আর এ সবই করা হয়েছে ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার একটি নির্বাচনের সমালোচনা করার জন্য।

এরশাদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করলেও দৃশ্যমান কোনো কারণ ছাড়াই তা গ্রহণ করা হয়নি দাবি করে পোস্টে বলা হয়, “এ নির্বাচন প্রহসনের। আমাদের জনগণের মুখে চপেটাঘাত করা।”

ওই ফেইসবুক পৃষ্ঠাটি যে ববি হাজ্জাজের, জাতীয় পার্টি রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি উইংয়ের মোরতাজা তা নিশ্চিত করেছেন। ববি ওই উইংয়ের প্রধান।

গত সপ্তাহে জাতীয় পার্টির চেয়াম্যান এইচ এম এরশাদকে র‌্যাবের পাহারায় হাসপাতালে নেয়ার পর নিজেকে তার মুখপাত্র দাবি করে এবং তার হয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আলোচনায় আসেন ববি হাজ্জাজ।

এরশাদ সিএমএইচে যাওয়ার পরদিন জাতীয় পার্টির রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্রাটেজি উইংয়ের প্যাডে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অসুস্থ না হলেও ‘চিকিৎসার নামে সিএমএইচে আটকে রাখা হয়েছে’ বলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তাকে জানিয়েছেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে এরশাদ অনড় রয়েছেন বলেও সেদিন দাবি করেন তার উপদেষ্টা।

এরপর শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে দাবি করেন ববি হাজ্জাজ। ওই রাতেই র‌্যাব কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়ে কথা বলেন। পরদিন মোরতাজা বিষয়টি নিশ্চিতও করেন।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশি ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের বড় ছেলে ববিকে র‌্যাব ‘জোর করে’ বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি অস্বীকার করেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

ববির অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে আমরা আসলে কিছুই জানি না।”

 

গত দুই দিন দলীয় নেতাকর্মী ও গণমাধ্যম কর্মীদের ফোনে সাড়া দিতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ববির ওই ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, “আটক থাকা অবস্থায় আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, দলীয় নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে আমার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনা হবে।”

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে লেখাপড়া করে আসা ববি বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। গত বছর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হন তিনি।