এক-তৃতীয়াংশ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীহীন

বিএনপির ‘বর্জন’ আর জাতীয় পার্টির ‘প্রত্যাহারের’ মধ্যেই দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে যাচ্ছেন রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2013, 03:12 PM
Updated : 13 Dec 2013, 03:12 PM

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত ১০৯টি আসনে একক প্রার্থী থাকার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখা।

এর মধ্যে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির ১১ জন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপির ২ জন এবং ওয়ার্কার্স পার্টির একজন রয়েছেন। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৯৫ জন আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ভোটের আগেই বিজয়ী হতে যাচ্ছেন।

শেষ পর্যন্ত কতোজন প্রার্থী ৫ জানুয়ারির ভোটে লড়বেন - আর কতোজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন- সেই তথ্য শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে কমিশন।

অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা ইতোমধ্যে গত নয়টি সংসদ নির্বাচনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের আগেই সর্বোচ্চ ৪৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল।

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে (১৯৭৩) নির্বাচনে ১১ জন, জিয়াউর রহমানের সময়ে (১৯৭৯ সালে) ১১ জন, এরশাদের সময়ে (১৯৮৮ সালে) ১৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর ২০০৭ সালের বাতিল হয়ে যাওয়া নির্বাচনে ১৮ আসনে একক প্রার্থী ছিলেন।

তবে নির্বাচনে সামনে রেখে অনেক নাটকের জন্ম দেয়া জাতীয় পার্টির ঠিক কতোজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন- সে বিষয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত মুখ খোলেনি নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও তার দলের প্রার্থীরা ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরদিন ‘সব দল না আসার’ কারণ দেখিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এরশাদ। এরপর গত দুই দিনে বিভিন্ন আসনে জাপা প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

এরশাদ নিজেও ঢাকা ও রংপুরের দুটি আসনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করলেও রংপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা শুক্রবার জানান, ওই আবেদন বিধি অনুযায়ী হয়নি। 

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিল্লার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় বিকাল ৫টায় শেষ হয়েছে। শনিবার বেলা ১টার পরে প্রতীক কাদের বরাদ্দ দেওয়া হলো তা জানা যাবে।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ শেষ হওয়ায় শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টার মধ্যে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক দেয়া হবে। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার।

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় পার হওয়ার পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে একক প্রার্থীদের নাম গণবিজ্ঞপ্তি আকারে জারির মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। তবে এসব প্রার্থীর গেজেট ৫ জানুয়ারি ভোটের পর একসঙ্গে প্রকাশ করা হতে পারে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন। ওই সময় ১১০৭ জন মনোনয়ন দাখিল করেছিল ২০টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে।

বাছাইয়ের পর ৮৪৭ জনের মনোনয়ন বৈধ হয়, বাতিল হয় ২৬০ জনের। এরপর ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর‌্যন্ত ১৩৮টি আপিল আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ৪২ জনের আপিল মঞ্জুর করে ইসি।