বিএনপির পরিকল্পনা মজিনাকে বললেন খালেদা

আগামীতে সরকার গঠন করলে বিএনপি কীভাবে রাষ্ট্র চালাতে চায় সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনাকে বললেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2013, 05:29 PM
Updated : 12 August 2013, 06:12 PM

সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা।

বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত মজিনা সাংবাদিকদের বলেন, “চমৎকার আলোচনা হয়েছে।”

মজিনা জানান, আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে ‘ভিশন’ কি হবে- সে বিষয়ে বিরোধী দলীয় নেতা কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কমিয়ে আনতে বিএনপি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সর্ম্পক রেখে কাজ করবে।

বিএনপির সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বিরোধী দলীয় নেতা রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, আগামীতে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে তার সরকারের অগ্রাধিকারের খাত হবে-  জ্বালানি, সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা; দুর্নীতি নির্মূল করা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টিতেও বিএনপি গুরুত্ব দেবে।”

এ বছরের শেষে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মজিনা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করতে বৃহৎ দলের মধ্যে সংলাপ দেখতে চায় তার সরকার।

“নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অভিমত হচ্ছে- দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠান। আমরা মনে করি- সংলাপ কিংবা আলোচনা হলে সমঝোতার একটি পথ বেরিয়ে আসবে।”

এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভূমিকা রাখবে কিনা জানতে চাইলে মজিনা বলেন, এজন্য বাংলাদেশ কোনো প্রভাবক চায় না।

বিএনপির সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বিরোধী দলীয় নেতা রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মনে করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের এই ইচ্ছাকে আমলে নিতে হবে। তাই আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচন নিয়ে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সরকার তার নিরসন করবে।’’

হরতালের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে শমসের মবিন বলেন, ‘‘ হরতাল হচ্ছে- রাজনৈতিক আন্দোলনের অংশ। সরকার নির্বাচন নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছালে আমরা আর হরতাল করব না। ’’

তবে রাষ্ট্রদূত মজিনা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি হরতালের পক্ষে নন।

তিনি বলেন, ‘‘ হরতাল একটি সহিংস কর্মসূচি। যে কোনো মানুষ তার প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণভাবে জানাতে পারে। কোনো সংঘাত-সহিংসতা আমরা দেখতে চাই না।’’

সম্প্রতি ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। কোনো বার্তা নিয়ে এসেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ওয়াশিংটন গিয়েছিলাম, বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে। আমরা রানা প্লাজা কিংবা তাজরীন ফ্যাশনসের মতো আর কোনো দুর্ঘটনা দেখতে চাই না। বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে চাই।’’

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টা থেকে এক ঘণ্টার এই বৈঠক হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও  সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।