জাগরণ মঞ্চের বক্তব্য নিয়ে উষ্মা আ. লীগ নেতাদের

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাগরণ মঞ্চ নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2013, 01:32 PM
Updated : 31 March 2013, 01:33 PM

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে রোববার রাতে এই বৈঠক হয়।  

বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাদের অধিকাংশই বলেছেন, গণজাগরণ মঞ্চের লাগাতার কর্মসূচি না আসাই ভালো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার দাবি উপেক্ষা করে স্পর্ধা দেখিয়েছে, মঞ্চের এই কথা নিয়ে সরব হন কয়েকজন।”

“এক পর্যায়ে শেখ হাসিনাও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চ তাদের বক্তৃতা ও বিবৃতিতে সরকারবিরোধী কিছু কথা বার্তা বলছে।”

তাদের এই বক্তৃতা-বিবৃতিতে কারা ‘সাহায্য’ করছে, সেই বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে শেখ হাসিনা তাগিদ দেন বলে জানান ওই নেতা।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর একে স্বাগত জানায় আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তাদের দাবির সঙ্গে মতৈক্য প্রকাশ করেন।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তিতে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনকে গণজাগরণ মঞ্চ স্বাগত জানালেও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি পূরণ না হওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে মঞ্চ।

সমাবেশে ইমরান এইচ সরকার।

গত ২৬ মার্চ শাহবাগে সমাবেশে মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার বলেন, “দুঃখের বিষয়, আমাদের দাবির ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মনে হচ্ছে সরকারের টনক নড়েনি, সরকার ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, যা প্রকারান্তরে গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করার শামিল। এ দাবি উপেক্ষা করে সরকার যে স্পর্ধা দেখিয়েছে, তা নজিরবিহীন।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, ইমরানের ওই বক্তৃতা নিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক কথা বলেন।

“সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, ‘অনেকেই মনে করে গণজাগরণ মঞ্চের বক্তৃতা আমি ড্রাফট করে দেই, বিষয়টি সত্য নয়’।”

“এ সময় নাছিম পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, আপনাকে সন্দেহ করা হয়, এটা কেন মনে হয়?”

“লেনিনকে সমর্থন করতে গিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, তাদের আন্দোলন থেমে গিয়েছিল, কিন্তু ব্লগার রাজিব নিহত হওয়ার পরে তারা আবার আন্দোলন জোরদার করে।”

“তখন শেখ হাসিনা বলেন, ইমোশন দিয়ে আন্দোলন ও রাজনীতি হয় না। এর জন্যে বাস্তবতা অনুসরণ করতে হয় ,” বলেন ওই নেতা।

তিনি আরো বলেন, সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হল-মার্ক নিয়ে বক্তব্যের সমালোচনা হয়। নারায়ণগঞ্জে সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমানের বিরোধের মেটানোর কথাও বলা হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনকে এই বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছেন।

সভায় সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বিএনপি-জামায়াত জোটের নৈরাজ্য ঠেকাতে সারাদেশে গণসংযোগ কর্মসূচির প্রস্তাব দেন।

শেখ হাসিনা এ প্রস্তাবের প্রতি গুরুত্বারোপ করে শিগগিরই এর তারিখ নির্ধারণ করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।