‘বিএনপির সংসদে ফেরা অনিশ্চিত’

আদালত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেয়ায় জাতীয় সংসদের আসন্ন অধিবেশনে বিরোধী দলের যোগ দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলের প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2013, 06:16 AM
Updated : 18 Jan 2013, 07:02 AM
শুক্রবার গুলশানে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আগামী ২৭ জানুয়ারি সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ডাকা হয়েছে। সরকারের আচরণে মনে হচ্ছে, বিরোধী দল সংসদে যাক- তারা চায় না। বিরোধী দলীয় নেতার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মিথ্যা মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেয়া হয়েছে।

“এ রকম অবস্থায় আমরা সংসদে যাবো কিনা ঠিক নেই। দলীয়ভাবে সংসদে যাওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”

রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান আগামী ২৭ জানুয়ারি বিকালে জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ডেকেছেন। নবম সংসদের এটি হবে ষোড়শ অধিবেশন।

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ত্রয়োদশ অধিবেশন থেকেই সংসদ বর্জন করে আসছে।

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া টানা ৮৩ দিন অনুপস্থিতির পর গতবছর ১৮ মার্চ সংসদে ফিরলেও ওই অধিবেশনের পর আর সংসদে যাননি।

তবে বিএনপি বলে আসছে, নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিল উপস্থাপন করলে তারা সংসদে ফিরে যাবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ ২০১১ সালের ৬ জুলাই হরতালে পিটুনির জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা খারিজ করার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতেই বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।

গত বছর করা ওই মানহানি মামলার গ্রহণযোগ্যতার শুনানির পর বৃহস্পতিবার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ শাহরিয়ার কবির তা খারিজ করে দেন। বিচারক বলেন, মামলাটি গ্রহণ করার মতো কোনো উপাদান নেই।

ফারুক গত বছরের ৪ অক্টোবর সরকারসহ সাতজনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা করেন।

গত বছরের ৬ জুলাই বিরোধী দলের হরতালে সংসদ ভবনের সামনে পিকেটিংয়ের সময় পুলিশের পিটুনির শিকার হন সংসদ সদস্য ফারুক। এরপর ১০ জুলাই বিএনপির সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজাম বাদি হয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আদালত ওই মামলাটিও খারিজ করে দেয়।

বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ বলেন, “গণমাধ্যমের মাধ্যমে সারা বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে পুলিশ আমাকে মেরেছে। এই মামলাটি খারিজ করার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, দেশের আদালত ও বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। বিএনপির মামলা হলে আদালতে তা খারিজ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের দেয়া অসত্য মামলার বিচার হচ্ছে।”

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ‘মিথ্যা’ দাবি করে ফারুক বলেন, “খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এ রকম মিথ্যা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়ে সরকার তাকে সাজা দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে।”

গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকার একটি আদালত বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা বিরুদ্ধে জিয়ার বিরুদ্ধে চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতি মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেয়।

বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার ‘নানা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে’ সরকার রাশিয়া থেকে নতুন করে ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে।

তিনি বলেন, “জনগণ বুঝতে পেরেছে, কমিশন খাওয়ার জন্য এই অস্ত্র আনার চুক্তি করা হয়েছে। এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে রাশিয়া থেকে মিগ-২৯ বিমান কেনার চুক্তি করেছিল। সেই মিগ-২৯ বিমান সংগ্রহে দুর্নীতি হয়েছিল। এ ব্যাপারে মামলাও হয়েছে।”

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরকালে সামরিক বাহিনীর জন্য নানা ধরনের অস্ত্র কেনার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়।