৯১(ই) ধারার অপপ্রয়োগের সুযোগ নেই: সাখাওয়াত

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ (ই) ধারা বাতিলে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির মধ্যেই নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ওই ধারার অপপ্রয়োগের কোনও সুযোগ নেই। তিনি মনে করেন, এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। (আরও তথ্যসহ)

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2008, 06:06 AM
Updated : 25 Nov 2008, 06:06 AM
ঢাকা, নভেম্বর ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ (ই) ধারা বাতিলে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির মধ্যেই নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ওই ধারার অপপ্রয়োগের কোনও সুযোগ নেই। তিনি মনে করেন, এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।
৯১(ই) ধারা নির্বাচন কমিশনকে কোনও ব্যক্তির প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা দিয়েছে। এ ধারার অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।
সাখাওয়াত হোসেন মঙ্গলবার ইসি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, "নির্বাচনকে প্রভাবিত করা কিংবা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুরূহ করার মতো গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হলেই শুধু নির্বাচন কমিশনেরই এখতিয়ার রয়েছে, ৯১ (ই) ধারার প্রয়োগ করার। তবে এর আগে কোনও লিখিত অভিযোগ অথবা চাক্ষুস প্রমাণ লাগবে। এরপর তদন্ত করা হবে এবং অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের শুনানি গ্রহণ করবে কমিশন। সুতরাং, এ ধারার অপপ্রয়োগের কোনও সুযোগ নেই। "
তিনি বলেন, "এ ধারাটি সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। বিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থিতা বাতিলের এই ক্ষমতা শুধু নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে রয়েছে। অন্য কোনও কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষ তা প্রয়োগ করতে পারবে না।"
"নির্বাচন কমিশন কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেও কমিশনারদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আদালতে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।"
উপজেলা নির্বাচন আর পেছানোর সুযোগ নেই বলে দাবি করেন সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, "ঘোষিত ২২ জানুয়ারির পর উপজেলা নির্বাচন পেছানোর আর কোনও সুযোগ নেই। বছরের শুরুতে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিধান থাকায় উপজেলা নির্বাচন পেছালে তা অনিশ্চিত হয়ে যাবে।"
১৮ ডিসেম্বর সংসদ এবং ২৮ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাচনের ভোগ্রহণের তারিখ রেখে গত ২ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে তিন দফায় তফসিল পরিবর্তন হয়। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ২৯ ডিসেম্বর সংসদ ও ২২ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উপজেলা নির্বাচন আরও পেছানোর দাবি জানিয়েছে।
তবে পুননির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনের সময়সূচিতে 'বেশ' ব্যবধান থাকায় দুই নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণায় কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করেন সাখাওয়াত।
তিনি জানান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও পৌর মেয়ররা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। তবে কাউন্সিলর পদটি 'লাভজনক পদ না হওয়ায়' পদত্যাগ না করেও তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। নির্বাচন করতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও পদত্যাগ করতে হবে।
নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানিয়ে শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে বলে সাখাওয়াত জানান। দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ের সুপারিশের বিধান অনুসরণ করার অনুরোধও জানান তিনি।
সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকটাত্মীয় প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ওই নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারবেন না বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, "নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকায় না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। শুধু ভোট দেওয়ার জন্য তারা নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারবেন। কোনও প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারবেন না।"
সাখাওয়াত জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনও প্রটোকল ব্যবহার না করতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে তারা নিরাপত্তা রক্ষী (সিকিউরিটি) সঙ্গে রাখতে পারবেন।
প্রচারণার কাজেও সরকারি কোনও যানবাহন ও বাংলো ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না বলে নির্বাচন কমিশনার জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এএল/এমআই/১৯২০ ঘ.