বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক প্রতিবাদ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু অশেষ রহমতে তিনি রক্ষা পাচ্ছেন।”
একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার এবং আওয়ামী লীগে ভাঙনের চেষ্টাসহ নানা চক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছত্রছায়ায় হয়েছিল বলে ভাষ্য মতিয়ার।
চিকিৎসার জন্য মধ্য জুলাইয়ে গিয়ে দুই মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাজ্যে থাকা বিএনপি নেত্রী দেশে ফিরছেন বলে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বের হয়। তবে চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় তার দেশে ফেরা আরও পিছিয়েছে বলে জানায় বিএনপি।
সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির একটি চক্রান্ত সফল না হওয়ায় খালেদার দেশে ফেরা পিছিয়ে যায় বলে ভাষ্য মন্ত্রী মতিয়ার।
তিনি বলেন, “দেশে যদি আসতেই না পারবেন, ডাক্তারের অ্যাপয়েনমেন্ট যদি পিছিয়েই যায়, তাহলে তারিখ দিছিলেন ক্যান? অন্য কিছু স্বপ্ন ছিল। ভেবেছিলেন অমুক ঘটিয়া যাইবে, তমুক ঘটিয়া যাইবে; কেউ কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু কিছুই ঘটে নাই, তাই তিনি আসতেও পারেন নাই।”
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে মন্তব্য করে মতিয়া বলেন, “চলতি বছরেই সরকারকে তিনটি বড় বাধা মোকাবেলা করতে হয়েছে।
“পাহাড়ি ঢলে হাওরে অসময়ে পানি আসার কিছুদিন পর শুরু হল বন্যা। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এই বন্যায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বন্যা যেতে না যেতেই শুরু হল রোহিঙ্গা সঙ্কট।”
চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটের ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামরিক উপায়ে ব্যবহারের কথা বলাকে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“তিনি জাতিসংঘে গিয়ে কূটনীতিকভাবে রোহিঙ্গাদের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠন করছেন। এই ক্ষেত্রে অনেকটা সফলও হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”
দেশে বর্তমানে খাদ্য নিয়ে অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমরা যেখানে চাল রপ্তানি করতাম, সেখানে এখন আমদানি করতে হচ্ছে। এটা ঠিক যে চাল নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করেছে’ মর্মে কিছু পত্রিকার মিথ্যা সংবাদ।”
অচিরেই চাল সঙ্কট কেটে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আল্লার রহমতে এবার আউশের ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ লাখ টন বেশি হয়েছে। তেমন কোনো বালা-মসিবত না হলে আমনের ফলনও ভালো হবে।”
‘দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও সরকার পতনের অপচেষ্টার’ বিরুদ্ধে ওই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ‘অপরাজেয় বাংলা’ নামের একটি সংগঠন। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যখন কূটনীতিক উপায়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন, রোহিঙ্গাদের পক্ষে বিশ্বজনমত গঠন করেছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে একটি মহল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
“বিএনপি অহেতুক সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার কথা বলছে। অথচ পুরো জাতি আজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং কোনো আলোচনা নয়, কোনো সংলাপ নয়।”
সরকার বিচার বিভাগের একটি ‘ক্যু’ ব্যর্থ করেছে বলে সভায় উপস্থিত অনেক আওয়ামী লীগ নেতা মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল বলেন, “১/১১ এর ষড়যন্ত্রকারীরা বিচার বিভাগকে ব্যবহার করেছে। একটা বিচার বিভাগীয় ক্যু করা যায় কিভাবে সেই ষড়যন্ত্র তারা করেছে। বিএনপি যেই দাবি করে, ষড়যন্ত্রকারীরা সেই সুরে কথা বলে। কিন্তু তাদের সব ষড়যন্ত্রই একে একে ব্যর্থ হয়েছে।”
অপরাজেয় বাংলার আহ্বায়ক এইচ রহমান মিলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, চারু শিল্পী মনিরুজ্জামান, কৃষকলীগ নেতা এমএ করিম ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কামাল চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।