সু চির ভাষণের একদিন পর বুধবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
একই দিন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও মিয়ানমারের নেত্রীর বক্তব্য ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান।
রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে তিন সপ্তাহে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বাংলাদেশে পালিয়ে আসা নিয়ে সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর সু চি।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মোট আট লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ‘যাচাই করে’ ফেরত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন সু চি।
রাখাইনে সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানালেও সেনাবাহিনীর বিষয়ে কিছু বলেননি সু চি। ভাষণে রোহিঙ্গা শব্দটি তিনি উচ্চারণও করেননি।
বুধবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মতবিনিময় অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম মিয়ানমারের নেত্রীর ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানান।
মন্ত্রী নাসিম বলেন, “রোহিঙ্গাদের নিয়ে সু চির দেওয়া কোনো বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। সব বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া এবং সেনা অভিযান ৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে বলে যে কথা সু চি বলেছেন, তা মিথ্যা বলে দাবি করেছেন একজন রোহিঙ্গা নেতা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম বলেন, “মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, যারা মিয়ানমারের নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে, আমরা ১৪ দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা করছি।
“আমরা নিন্দা করি সু চির আজকের এই ভূমিকাকে। তিনি শান্তিতে নোবেল পেয়ে কীভাবে এই নির্যাতনকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন?”
শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম।
“আমরা আজকে অনুরোধ করব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ বিশ্বের বড় শক্তিধর দেশকে, তারা যেন এগিয়ে আসে। এই নিরীহ মানুষের দিকে তাকিয়ে মিয়ানমারকে চাপ সৃষ্টি করার জন্য।”
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী এখন প্রশংসিত।
নাসিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই, অভিনন্দন জানাই যে আজকে বাংলাদেশের জনপদে লক্ষ লক্ষ নির্যাতিত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন।।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বিএনপি পক্ষ থেকে যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সফলতার কারণে আজকে সমগ্র বিশ্ব জেগে উঠেছে। ওরা (বিএনপি) কী বলছে, সেটা দেখার বিষয় না।”
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য শেখ হাসিনার জন্মদিনকে ‘মানবতা দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন। সভায় উপস্থিত নেতারা তা সমর্থনও করেন।