সরকারের অক্ষমতায় আকাশসীমা লঙ্ঘন: বিএনপি

সরকারের ‘অক্ষমতার’ কারণেই মিয়ানমারের বিমান বার বার বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2017, 12:27 PM
Updated : 18 Sept 2017, 12:34 PM

দলটির স্থায়ী কমিটির নেতা নজরুল ইসলাম খান সোমবার এক মানববন্ধনে অভিযোগ করেন, সীমান্তে প্রতিদিন মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, সীমান্তবাসীর ওপর অত্যাচার হচ্ছে, ফসল কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

“আজকে সরকারের অক্ষমতার কারণে বাংলাদেশের আকাশসীমা বার বার লঙ্ঘন করছে মিয়ানমার।… আমরা সরকারকে বলতে চাই, কোনোটাই যদি ঠেকাতে না পারেন তাহলে এই জোর করে ক্ষমতায় থাকার কী প্রয়োজন আপনাদের? শুধুই লুটপাট করার জন্য?”

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় রিলিফ টিমের সদস্য নজরুল বলেন, “টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গারা যে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে, তা অবর্ণনীয়। আপনারা পত্র-পত্রিকায় ছবি দেখছেন।

“যখন সারা দেশের মানুষকে সরকারের আহ্বান জানানো দরকার ছিল- আপনারা এই নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ান, তখন বিএনপিকে রিলিফ সামগ্রী দিতে বাধা দেওয়া হল। বিএনপিকে খালি বাধা দেওয়া হয়নি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের প্রাপ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আর সেই সহায়তা না পাওয়ার ফলে সেই ক্ষুধার্ত মানুষের যে কষ্ট, এর জবাব কে দেবে?”

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনকে শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ দিতে দেখলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা তাদের ১৪ দলীয় জোটের কাউকে সেখানে দেখেননি বলে জানান বিএনপি নেতা নজরুল।

তিনি বলেন, “খালি বড় বড় কথা। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রতিদিন গলাবাজি। চিবাইয়া, চিবাইয়া মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। মানুষ এসব দেখে না।”

সরকারের একার পক্ষে এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মানবিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব নয় মন্তব্য করে নজরুল বলেন, “সারা দেশের মানুষ যাতে নিপীড়নের শিকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে, সেই সুযোগ দেওয়া হোক।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কেরানীগঞ্জের বাড়িতে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি সভায় ‘পু্লিশি হামলার প্রতিবাদে’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন হয়।

নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, গয়েশ্বরের বাড়িতে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের অনেকের মোটর সাইকেল লুট করা হয়েছে, ভাংচুর করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“এ কোন সমাজে আমরা বাস করছি? হিন্দু ধর্মের লোক হয়ে পূজা আয়োজনের সভা করতে গেলে আক্রমণ করা হবে, মুসলমান ধর্মের মানুষ ইফতার করতে গেলে সেখানে আক্রমণ করা হবে, গুণ্ডা-পাণ্ডারা লুটপাট করে খাবে… এই দুর্ভোগ, এই দুর্ভাগ্য থেকে জনগণ মুক্তি চায়।”

চালের দাম বৃদ্ধির জন্যও সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন এই বিএনপি নেতা।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগ নাকি সেকুলার দল, আওয়ামী লীগ আসলে পিকুলিয়ার দল। কারণ ওরা যে কোনো সময় নিজেদের স্বার্থে কাজ করতে পারে। আপনাদের মনে নাই? ১৯৭২-৭৫ সালে কত হিন্দু নেতার ওপরে অত্যাচার করা হয়েছে…।”

এই বিএনপি নেতার ভাষায়, আওয়ামী লীগ আসলে বিরোধী দল ও মতকে ‘মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে চায়’, সে যে ধর্মের মানুষই হোক না কেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, আতাউর রহমান ঢালী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অমলেশ দাশ অপু, জন গোমেজ, নিপুণ রায় চৌধুরী, সুশীল বড়ুয়া, আমিনুল ইসলাম, রমেশ দত্ত, অ্যালবার্ট পি কস্টা ও নাজিমউদ্দিন মাস্টার এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন।