শনিবার ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের এক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান জোটের সমন্বয়ক নাসিম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর গত দুই সপ্তাহে তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে জাতি সংঘের হিসাব।
দশকের পর দশক ধরে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশের পক্ষে নতুন করে শরণার্থী নেওয়া দুষ্কর বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও স্বীকার করছে।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সদয় হতে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
নাসিম বলেন, “রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে শেখ হাসিনাকে দল-মতনির্বিশেষে সহযোগিতা করুন। বিএনপি নেতাদের বলছি, রোহিঙ্গাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানাবেন না, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করবেন না, অহেতুক সমালোচনা করবেন না।”
সংবাদ সম্মেলনে বিমানমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তার সার্থে আমাদের দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।”
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানেবিশ্বের অন্য দেশগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী নাসিম।
তিনি বলেন, “আমরা বিস্মিত হয়েগেছি, শান্তিতে নোবেলজয়ী সুচির দেশে কেন এত হত্যাকাণ্ড?
“মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য এবং মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য পৃথিবীর বড় দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের বিষয়টি ১৪ দল কীভাবে দেখছে- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন,“রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই সরকার বাযোমেট্রিক পদ্ধতিতে তাদের নিবন্ধন করে নিচ্ছে।”
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যেন সারা দেশে ছড়িয়ে না পড়ে,সেদিকে নজর রাখার জন্য সরকারের সজাগ থাকার উপর জোর দেন ১৪ দলের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন,“জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ওই এলাকায় ঘাঁপটি মেরে যে কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
“পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যেন সারা দেশে ছড়িয়ে না পড়ে এর জন্য সরকারের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।”
১৪ দলের বৈঠকে জাসদের এক অংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, অন্য অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।