ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে বলায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান খায়রুল হককে ভবিষ্যতে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ষোড়শ সংশোধনীর ৭৯৯ পৃষ্টার এই রায়ের পর্যবেক্ষণের যে প্রতিটি লাইন আছে, এখানে কোনো অবান্তর বিষয় নাই, কোনো ভ্রান্তিমূলক বিষয় নাই।
“একদিন বাংলাদেশের মানুষ এই রায়ের প্রতিটি লাইন এদেশে বাস্তবায়ন করবে, তখন কিন্তু খায়রুল হককে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।”
খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা দেখেছি স্বৈরাচার আইয়ুব খানের মতো মাইটি সরকার অনেক দিন যাবৎ জোরের সাথে দেশ চালিয়েছে, শেষ রক্ষা হয় নাই। এরশাদ দেশ চালিয়েছে, শেষ রক্ষা হয় নাই। হিটলার-মুসোলিনির মতো বড় বড় ডিকটেররা দেশ পরিচালনা করেছে, সর্বশেষ তাদের শেষ রক্ষা হয়নি।”
ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের এজলাসের ঘোষিত রায় এবং ১৬ মাস পর প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে ভিন্নতা ছিল বলে দাবি করেন এই বিএনপি নেতা।
“দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি এই খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার ১৬ মাস পরে যে পূর্ণাঙ্গ রায় দিলেন, তাতে তিনি বেমালুম এটা তুলে দিয়েছিলেন। এর থেকে গর্হিত অপরাধ কী হতে পারে। একজন বিচারপতি আদালতে বসে যে রায় দিলেন, পরে তিনি সেটা বেমালুম ভুলে গেলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় থেকে তুলে দিলেন।”
দেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ‘জেগে উঠবে’ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়। সেজন্য ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর যেখানে তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ, সেখান তারা পদত্যাগ না করে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।
“আমরা বলতে চাই, দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে আবার জেগে উঠবে। আওয়ামী লীগের নেত্রীকে জনগণের দাবির কাছে মাথানত করতে হবে, তা নাহলে তাদের পরিণতির জন্য তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায়ের প্রেক্ষাপটে বর্তমান রাজনীতি’ শিরোনামে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট।
এতে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশরাফউদ্দিন বকুল এবং হুমায়ুন কবির ব্যাপারী বক্তব্য রাখেন।