বিয়ের আগে রাজনীতি বুঝতাম না: রিজিয়া নদভী

মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে আলোচনায় থাকা রিজিয়া নদভী দাবি করেছেন, বিয়ের আগে রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত ছিলেন না বলে বাবার সূত্রে জামায়াতের কোনো কাজেও তার সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

কাজী মোবারক হোসেন নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2017, 02:19 PM
Updated : 25 July 2017, 02:19 PM

রিজিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীর স্ত্রী হওয়ার পরই তার রাজনৈতিক তৎপরতার শুরু এবং তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেন।

গত শনিবার আওয়ামী মহিলা লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর তাতে কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে রিজিয়ার নাম দেখে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের মধ্য থেকেই এর সমালোচনা ওঠে।

রিজিয়া (রিজিয়া রেজা চৌধুরী) চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে একাধিকবার জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে।

তবে তার স্বামী নেজামুদ্দীন নদভী দক্ষিণ চট্টগ্রামেরই সাতকানিয়া-লোহাগড়া আসন থেকে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। 

রিজিয়াকে পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে তার বর্তমান পরিচয় অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের স্ত্রীর পরিচয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক।

এই বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটিতেও এসেছিল রিজিয়ার নাম; তখন জামায়াত নেতার মেয়ের পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কর্মী ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। পরে তার নাম বাদ দেওয়া হয়।

রিজিয়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার পারিবারিক ইতিহাস ছিল, যা দেখে তিনি টেলিফোন করে তার প্রতিক্রিয়া জানান।

রিজিয়া বলেন, মহিলা আওয়ামী লীগে তার পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করার ‘আত্মত্যাগই’ গুরুত্ব পেয়েছে।

“প্রধানমন্ত্রী তার বাবার আদর্শ রক্ষার জন্য দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, আর আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার বাবার বিরুদ্ধে রাজনীতি করছি।”

সংসদ সদস্যের স্ত্রী হিসেবে কোনো সুযোগ নেননি বলেও দাবি করেন রিজিয়া।

“দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। উত্তরাধিকার সূত্রে আমি রাজনীতি করছি না। আমার এলাকায় নারীদের সংগঠিত করেছি। জামাত-শিবিরের এলাকায় প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে নারীদের নৌকা প্রতীক ও আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছি। সাংগঠনিক যোগ্যতা দেখেই আমাকে মহিলা আওয়ামী লীগের পদ দেওয়া হয়েছে।”

জামায়েত সমর্থক ছাত্রীদের সংগঠন ছাত্রী সংস্থায় কখনও যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতার এই মেয়ে।

“নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমার বিয়ে হয়েছে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তানের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠেছি। এর আগে রাজনীতি বুঝতাম না।

“কম বয়সে বিয়ে হয়েছে, সংসার আর স্বামীর সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বাবার রাজনীতির কথা কোনো সময় মাথায় অনিনি।”

চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময় ছাত্রী সংস্থায় জড়িত ছিলেন বলে যে তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে, তা নাকচ করে রিজিয়া বলেন, “আমি পড়েছি ছুলেমা-সিরাজ মহিলা মাদ্রাসায়। কোনো সময় ছাত্রী সংস্থার সাথে জড়িত ছিলাম না।”

জামায়াত নেতা বাবার পরিচয় এখন যারা তুলে তার পদ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তারা তাকে ও স্বামী নেজামুদ্দীন নদভীকে হেয় করতে চাইছেন বলে মনে করেন রিজিয়া।