হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে রেখে নির্বাচন হবে ‘প্রহসন’: মোশাররফ

প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনাকে রেখে একাদশ নির্বাচন ‘প্রহসন’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2017, 10:29 AM
Updated : 23 July 2017, 10:29 AM

রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “এদেশের জনগণ আপনাকে (শেখ হাসিনা) বিশ্বাস করে না, আমরা যারা বিরোধী দল আপনাকে বিশ্বাস করি না। বিএনপিসহ বাংলাদেশের বহু রাজনৈতিক দলের আপনার ওপর আস্থা নাই।

“আমাদের সোজা কথা- আগামী সংসদ নির্বাচনের সময়ে আপনি যদি ক্ষমতায় থাকেন সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। সেটা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসন এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করা হবে।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়েও তারা একই দাবি জানিয়ে আসছে।

তবে সংবিধান সংশোধনের পর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনের সুযোগ নেই বলে আওয়ামী লীগ নেতা বলে আসছেন।

সংবিধানের দোহাই দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের নামে ‘নৈরাজ্য’ সৃষ্টির পাঁয়তারা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।

তিনি বলেন, “নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার এখন জনগণের দাবি, এই দাবি বড় কোনো দাবি নয়, এটা আমাদের অধিকার। আমরা একটা প্রস্তাব দেব- সরকার বলবে মানি না। তারা বলবে, আমাদের অধীনে নির্বাচন করতে হবে- আমরা বলব মানি না।

“এদেশের জনগণ সেজন্য উৎকন্ঠিত যে একাদশ নির্বাচনকে সামনে নিয়ে আবার একটা নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা হচ্ছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। নানাবিধ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই, আমরা দেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত দেখতে চাই, আমরা জনগণের ভোটের অধিকার তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই।”

একাদশ নির্বাচনের সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান সংবিধান সংশোধনের পক্ষে মত ব্যক্ত করেন তিনি।

“এদেশে যেমন সংবিধানের বাইরে নির্বাচন হওয়ার উদাহরণ আছে। ১৯৯১ সালে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ সাহেব। আবার আমরা অতীতে দেখেছি, জনগণের প্রত্যাশা, জনগণের প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী দিনেও সহায়ক সরকারের ব্যাপারে যদি প্রয়োজন হয়, জাতি চায়, সংবিধান পরিবর্তন করে, সংশোধন করে সেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা সংবিধানে সন্নিবেশিত করতে হবে।”

“আওয়ামী লীগের আজকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, এটা করতে হবে। এটা না করলে জনগণ তাদের বাধ্য করবে। তাহলেই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে।”

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের ব্যাপারে সমঝোতা না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে এর ‘ফয়সালা’ করা হবে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের বিষয়ে ফয়সালা না হলে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ কোনো ভূমিকাই রাখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ।

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির ব্যাপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, মহানগর বিএনপি উত্তরের সহসভাপতি একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।