শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা তুলে নেওয়ার দাবি বিএনপির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়া সাত কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের হত্যাচেষ্টার মামলা দায়েরের নিন্দা করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2017, 12:55 PM
Updated : 22 July 2017, 12:55 PM

শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পুলিশ গুলি, লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উল্টো গত ১২শ শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। …এটা যে একটি পুলিশি রাষ্ট্র তার আরেকবার প্রমাণ দিল- এই ভোটারবিহীন সরকার।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা সরকারের হুকুম ছাড়া এই মামলা করেনি পুলিশ।

“যারা হামলার শিকার হলো, আক্রান্ত হলো, রক্তাক্ত হলো পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা করছে। আসলে বিনা ভোটের সরকার বর্তমানে এতটা আতঙ্কিত সামান্য মিছিল বা বিক্ষোভ দেখলে ভয় পায়, আঁতকে উঠে।”

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহার ও আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানান রিজভী।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া ঢাকার সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ সাত দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ কালে পুলিশ-আন্দোলনকারীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভে অংশ নেন।

রাতে ১২‘ শ শিক্ষার্থীকে আসামী করে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ।

‘থলের বিড়াল বের করে দিয়েছেন’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সরকার দলীয় সাংসদ এনামুর রহমানের বক্তব্যের তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘‘ ক্রসফায়ার নিয়ে আমরা এতো যা বলেছি, বলছি, তা সুস্পষ্ট। দেশ বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বলেছে। দৃশ্যমান অনেক ঘটনা- সরকার তুড়ি মেরে উড়ে দেন। এখন তার(সরকার) এমপি বলেছেন পাঁচজনকে ‘ক্রসফায়ার’ দিয়ে হত্যা ও আরো ১৪ জনের তালিকা ঘোষণার কথা।”

‘‘ এখন সেই সংসদ সদস্য যতোই বক্তব্য প্রত্যাহার করুন না কেনো, তিনি থলের বিড়াল বের করে দিয়েছেন। সরকার দলীয় একজন এমপির ক্রসফায়ারের তালিকা তৈরির ঘোষণায় এটা প্রমাণিত হলো যে, এতোদিন ধরে বর্তমান সরকারের জীবন বিনাশী রক্ত ও লাশ ফেলার কর্মসূচির বিষয়ে বিরোধী দলের অভিযোগ সত্য এবং যথার্থ। এই এমপির ঘোষণায় সকল বিচারবর্হিভুত হত্যাকান্ড, বেআইনি গুম, খুনের সাথে বর্তমান সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।’’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমানের নাম ব্যবহার করে কয়েকটি অনলাইনে ও সামাজিক গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিমূলক, মিথ্যা, বানোয়াট’ অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।

‘‘ এসব প্রচারনা বানোয়াট, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, নোংরা, অসত্য। সরকারের এজেন্সিরা যেসব কাজ করছে, এটা একেবারে নিশ্চিত, সরকার পরিকল্পিতভাবে করছে। ওইসব বক্তব্যের সাথে বিএনপির ওই তিন নেতাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, এসব অপপ্রচার করে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অটুট বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ, এতে কোনো ছেদ ধরাতে কেউ পারবে না।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মুনির হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।