তিনি বলেছেন, “বর্তমান সঙ্কটটি রাজনৈতিক। সংবিধানের কথা বলে সমঝোতার পথ এড়িয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। সংবিধানকে এখানে বড় করে দেখার কোনো উপায় নেই।
“সংবিধান তো মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। সুতরাং সংবিধানকে দোহাই দিয়ে এই বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে না।”
সংবিধান সংশোধনের পর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনের সুযোগ নেই বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বলে আসার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার এক আলোচনা সভায় একথা বলেন মওদুদ।
সরকারকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে মওদুদ ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে নির্বাচনের নজির তুলে ধরেন।
“সমঝোতার উপর ভিত্তি করেই আগামী নির্বাচন হতে পারে। ১৯৯১ সালে যেভাবে হয়েছিল। তখন রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর ভিত্তি করেই সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। সেটা করতে হয়েছিল কেন? রাজনৈতিক কারণে, সাংবিধানিক কারণে নয়। সংবিধানে এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।”
একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় মওদুদ বলেন, “এতে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো রোডও নাই, ম্যাপও নাই।
“একটি একদলীয় শাসন কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, কীভাবে আওয়ামী লীগকে সরকারে পুনর্বাসন করা যায়, সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
“একটু খেয়াল করে দেখবেন, নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সকল রাজনৈতিক দলের সমান অধিকার দেওয়া হবে- এই শব্দগুলো অনুপস্থিত।”
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে না বলেও মত জানান মওদুদ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১ এর উদ্যোগে ‘সহায়ক সরকারের অধীনের জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় দলীয় চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়েও কথা বলেন তিনি।
এনিয়ে ক্ষমতাসীন দলের বক্তব্যের জবাবে মওদুদদ বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার পালিয়ে যাওয়ার কোনো রেকর্ড নাই।
“২০০৮ সালে তখনকার সেনা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্যারোলে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমাদের নেত্রীকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি আপস করেন নাই। পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস নেই বেগম খালেদা জিয়ার।”
ঢালী আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মওদুদ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক শাম্মী আখতার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল।