আইসিটি আইনে সাংবাদিক নির্যাতনে সরকার: বিএনপি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মামলা দিয়ে সরকার সাংবাদিক নির্যাতন করছে অভিযোগ করে অবিলম্বে আইনটির ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2017, 12:08 PM
Updated : 21 July 2017, 12:09 PM

শুক্রবার রাজধানীর নয়া পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের নির্যাতন করছে সরকার। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। গতকালও একজন সিনিয়র সাংবাদিককে ৫৭ ধারায় আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছে।”

পর্নোগ্রাফি ও আইসিটি আইনে সাবেক এক রাজস্ব কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন উচ্চ আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা তাকে কারাগারে পাঠান।

রিজভী বলেন, “আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা স্বাধীন মতপ্রকাশের অন্তরায়। বর্তমানে ৫৭ ধারার ভয়াবহতা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক বিধানসহ সকল কালাকানুন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”

সেই সঙ্গে সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।

নতুন করে সরকারের তৈরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়াকে  ‘আরো ভয়াবহ’ বর্ণনা করে রিজভী বলেন, “গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি ৫৭ ধারা থেকে আরও ভয়াবহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে সরকার। সে আইনের ১৯ ধারাতে গণমাধ্যমকে আরও শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণের বিধান রাখা হয়েছে।

“ওই আইনের খসড়ার ১৯ ধারায় বিদ্যমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সব বিষয় বিদ্যমান রয়েছে। এই ১৯ ধারাতেও তথাকথিত মানহানি, সামাজিকভাবে অপদস্ত করার চেষ্টা বিশেষভাবে রাখা হয়েছে।”

প্রস্তাবিত আইটির খসড়ার ১৫ (৫) ধারায় যে বিধান রাখা হয়েছে তা চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আরেকটি বড় খড়গ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“কারণ এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কোনো বক্তব্য সরকারি ভাষ্যের বিপরীত হলে তা ‘ডিজিটাল সন্ত্রাসী অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হবে।’’

এসব বিষয়ে সরকার একটি নির্দিষ্ট ছক অনুসরণ করছে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, প্রকৃত ইতিহাস ও প্রকৃত ঘটনা বাংলাদেশে চলবে না। আওয়ামী গবেষণা, আওয়ামী ছক, আওয়ামী নীলনকশা অনুযায়ী কথা বলতে হবে।

“তার বাইরে গেলেই এসমস্ত কালাকানুনের কোপানলে পড়তে হবে।”

রিজভী বলেন, “আমরা মনে করি, সরকারের এসব কালাকানুন ও নীতিমালা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম- তাদের সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল মিডিয়া তথা ওয়েবসাইট, অনলাইন সামাজিক মাধ্যমের সরাসরি হস্তক্ষেপ।”