গত পাঁচ দিন দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যাক্রান্ত কয়েকটি জেলা পরিদর্শন করে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বন্যায় অসহায় মানুষদের সাহায্য করা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ফাঁকা আওয়াজ দেওয়া হয়েছে। বিএনপিনেত্রী ত্রাণ বিতরণ দূরে থাকুক বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছেন। আর উনার মহাসচিব ঢাকায় বসে বড় বড় কথা বলছেন।
“তারা জনগণের দুঃখ-কষ্ট নয়, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। আমি তাদের উদ্দেশে বলব, ফাঁকা আওয়াজ না দিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ান। আপনাদের সামর্থ্য না থাকলে আমাদের কাছ থেকে ত্রাণ নিয়ে যান।”
জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বন্যার প্লাবিত প্রত্যন্ত এলাকা সফর করেছেন ত্রাণমন্ত্রী।
তিনি জানান, বন্যা প্লাবিত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, বন্যাক্রান্ত প্রত্যেক জেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ মোবাইল গাড়ি পাঠানো ছাড়াও ৩ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য ৯০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ত্রাণমন্ত্রী।
আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়াদের খাবার, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে মায়া বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ইজিপিপি প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
“উত্তরাঞ্চলের পানি নামতে শুরু করায় সেসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নত হতে শুরু করেছে। বন্যার পানি মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে চাপ দেবে। এসব এলাকার জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করব অতি দ্রুত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে বন্যার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে।”
মন্ত্রী বলেন, “আমি জেলা প্রশাসকদের বলেছি, চাহিদামতো প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য ও আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হবে। একটি লোকও যাতে খাবারের কারণে কষ্ট না পায় এটা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
“ত্রাণ বিতরণে যাতে কোনো ধরণের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য আমরা জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। এনজিওদেরকে ঋণের কিস্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার বিষয়ে অনুরোধ করেছি।”
যেসব বেড়িবাঁধ এখনও ঝুঁকির মধ্যে আছে সেগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হবে জানিয়ে মায়া বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষক ও খামারিদের ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করা সরকারের অগ্রাধিকার কাজ।
“ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত ও নির্মাণ, রাস্তাঘাট ও বেড়িবাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরামত, কৃষকদের কৃষিবীজ ও সার বিতরণ, মৎস ও প্রাণিসম্পদ খামারিদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের প্রধান কর্তব্য। আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাই।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল ছাড়াও এই মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।