রোডম্যাপ অর্থহীন, নির্বাচন কমিশন তল্পিবাহক: মওদুদ

বর্তমান নির্বাচন কমিশনে সাহসী ও নিরপেক্ষ মানুষ না থাকায় তাদের ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ অনুযায়ী সংলাপের পরিকল্পনা শেষ পর‌্যন্ত কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন মওদুদ আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2017, 02:30 PM
Updated : 14 July 2017, 02:30 PM

‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’ না হলে এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপির এই নেতা।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীতে এক সভায় মওদুদ বলেন, ক্ষমতা ‘প্রায় একই রকম’ হলেও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না।

“বিগত নির্বাচনের সময়ে ভারতের মানমোহন শিং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি হেরে গেছেন, মোদী (নরেন্দ্র মোদী) জয়লাভ করেছেন; তার দল বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। সেই ধরণের ঐতিহ্য, সেই ধরনের চর্চা আমাদের বাংলাদেশে তো নাই।

আমাদের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সেই ধরণের সাহসী মানুষ, নিরপেক্ষ মানুষ নাই। সুতরাং তারা(ইসি) যতদিন পর্যন্ত দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে- এই রোডম্যাপ বলুন, যতই তারা প্রচেষ্টা করুক না কেনো- সবই শেষ মুহূর্তে অর্থহীন হবে।”

শেষ মুহূর্তে এই কমিশন ‘সরকারের তল্পিবাহক বা আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন,  এই নির্বাচন কমিশন সত্যিকারঅর্থে নিরপেক্ষ কমিশন না। আজকে প্রধানমন্ত্রীসহ এই সরকারের মন্ত্রী-নেতৃবৃন্দরা জনসভা করে নৌকায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে ভোট চেয়ে জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছেন।

মওদুদ বলেন, “আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন যতই রোডম্যাপ দিক না কেন? এটা অর্থহীন। এই রোডম্যাপ অর্থহীন হবে বা এই যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তারা(ইসি) আলোচনা করবেন, আলোচনা করে কথা বলবেন।

“আমরা এই নির্বাচন কমিশনকে পছন্দ করি নাই, আমরা মনে করি এই কমিশন একপেশে। দলীয়ভাবে তাদেরকে নিয়োগদান করা হয়েছে, এই কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা নাই।”

তবে ‘জাতির স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে’ বিএনপি এই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবে মন্তব্য করেন দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

“নির্বাচন কমিশন কখনোই নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় একটি সরকার থাকবে, যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। যেটাকে আমরা সহায়ক সরকার বলি।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ঢাকাস্থ সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুকের মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভা হয়।

সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “আমাদেরকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়না। আমাদেরকে একটা সভা করতে দেওয়া হয় না। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাঙ্গামাটিতে একটা নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন সেখানে যারা ভূমিধসে নিহতের পরিবার ও আহতদের সমবেদনা জানানো জন্য, সেখানে তাকে যেতে দেয়নি। সরকার কতটুক নিচু হয়ে যেতে পারে তা বলার নেই।”

নোয়াখালীতে নিজের প্রয়াত ছেলের স্মরণে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ‘ক্ষমতাসীনরা পণ্ড করে দিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন মওদুদ।

ঢাকাস্থ সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামেরসভাপতি হারুন-অর রশিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ বি এম ফারুকের পরিচালনায় সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহানগর নেতা আবদুল হান্নান, তৃণমূল দলের হানিফ ব্যাপারী, মোক্তার হোসেন পাটোয়ারি, শাহাদাত হোসেন আনসারী তিতুমীর, উনুস পাটোয়ারি বাচ্চু ও মোজাম্মেল হোসেন বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে কারাবন্দি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুকের মেয়ে ফারজানা ফারুক প্রেমা উপস্থিত ছিলেন।