বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দশম সংসদের ষষ্ঠদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে রাজধানীর জলাবদ্ধতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ভেজাল ও মাদকের প্রভাব, পরিবহন সমস্যা ও নদী দূষণসহ নানা সমস্যা তুলে ধরেন তিনি।
রওশন এরশাদ বলেন, “ঢাকায় প্রতিদিন ৯৬০ জন লোক আসছে। বন্যা-ভাঙনে গৃহহীন, চাকরি বা নতুন কর্মসংস্থানসহ নানা কারণে মানুষ আসছে রাজধানীতে।
“ঢাকায় মানুষ আসছে স্রোতের মতো। অবস্থা এমন যে আর জায়গা নেই। এভাবে ঢাকার জনসংখ্যা বাড়ছে, এত লোক ঢাকায়, বাসে লোক উঠতে পারে না।”
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রওশন বলেন, “ঢাকাকে বাঁচান। ঢাকাকে বাঁচাতে চাইলে এখনই ব্যবস্থা নিন, না হয় পরিবেশ দূষণে ভাগাড়ে পরিণত হবে। নদী বাঁচান, ঢাকা বাঁচান। দূষণ ও ভেজাল রোধ করেই ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিশন বাস্তবায়ন করতে হবে।”
ঢাকা যখন সবুজ ছিল তখন কলকাতা নগর দূষণে ভারাক্রান্ত হলেও এখন কলকাতা ‘তিলোত্তমা, পরিষ্কার’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “দেশের অন্যান্য জায়গায় শিল্প কারখানা বাড়ান, তাহলে ঢাকা থেকে লোক ফিরে যাবে। আটটা ডিভিশনে আটটি হাই কোর্টের বেঞ্চ করেন। তাতে ঢাকায় লোক কমে যাবে।”
এই পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ঢাকাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে রওশন বলেন, “বিভাগে বিভাগে এখন শিক্ষাবোর্ড দিয়েছেন, হাই কোর্টের বেঞ্চ দিতেও অসুবিধা নেই। তা না হলে দেশকে বাঁচানো যাবে না। এখন ব্যবস্থা নিলে আপনি চিরস্মরণীয় হয়ে যাবেন।”
রাজধানীতে মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ নিয়ে তিনি বলেন, এখন হাজার হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছে।
চিকুনগুনিয়া রোধে মানুষকে সচেতন করতে সিটি করপোরেশনকে পরামর্শ দেন তিনি।
প্লট চাইলেন আবারও
ঢাকায় জমিহীন সংসদ সদস্যদের জন্য আবারও প্লট বরাদ্দের দাবি জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, “সাংসদদের যারা প্লট পাননি তাদের একটি করে প্লট দিলে ভালো হয়। ঢাকায় তো মাথাগোজার ঠাঁই দরকার। পূর্বাচলে জায়গা অনেক। প্রতি এমপিকে যদি ৫ কাঠা করে দেন ভালো।”
বাজেট ‘ভালো হওয়ায়’ সমালোচনা
রওশন এরশাদ বলেন, “ভালো বাজেট না দিলে এতো আলোচনা, সমালোচনা হত না। জনগণের দাবি পূরণ করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তা গ্রহণ করেছেন। এটা এ বাজেটের ভালো দিক।”
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে রওশন এরশাদের বক্তব্যের সময় সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা কয়েকবার টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান।