দুদকের মামলা স্থগিত চেয়ে মওদুদের আবেদন খারিজ

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2017, 05:04 PM
Updated : 12 July 2017, 05:05 PM

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।

সম্পদ বিবরণীতে ব্যায়ের খাত উল্লেখ করার বিধান নেই দাবি করে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে মওদুদ এ আবেদনটি করেছিলেন।

আবেদন সরাসরি খারিজ হওয়ায় চলমান ওই মামলার কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান।

তবে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে জানিয়েছেন মওদুদ আহমদের চেম্বারের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।  

আবেদনের পক্ষে আইনজীবী মওদুদ আহমদ নিজে শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।

খুরশীদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্পদ বিবরণীতে ব্যায়ের খাত উল্লেখ করার বিধান নেই বলে অপরপক্ষ দাবি করেছে। কিন্তু এ বিষয়টি তো সাক্ষ্য-প্রমাণের বিষয়। ফলে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে বিচারিক আদালত। তাই বলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকতে পারে না। আবেদনটি খারিজ হওয়ায় বিচারিক আদালতে মামলাটি যথারীতি চলবে।

আইনজীবী মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ২০০৭ সালে মওদুদ আহমেদকে নোটিস দেয় দুদক। সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার পর মামলা এবং অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

“ওই এফআইর-এ বলা হল তিনি ব্যয় খাত গোপন করেছেন। পরবর্তীতে অভিযোগপত্রে ব্যয়ের পাঁচটি খাত (ব্যক্তিগত, পারিবারিক, পেশাগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক) উল্লেখ করে বলা হয়, এই পাঁচটি খাতে তিনি তিনি যে টাকা ব্যয় করেছেন তা তিনি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।”

আইনজীবী মাহমুদ বলেন, “কিন্তু ব্যয় খাতের বিবরণীর বিষয়টি দুদকের আইনে নেই। এমনকি যে নোটিসটি দুদক পাঠিয়েছিল সে নোটিসের সঙ্গে একটি ফরম দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সে নোটিসে স্থাবর-অস্থাবর এবং আয়ের উৎসের বিবরণী দেওয়ার ছক ছিল। সেখানে ব্যয় বিবরণী দেওয়ার কোনো ছক ছিল না। তাছাড়া দুদক আইনেও ব্যয় বিবরণী দেওয়ার কোনো বিধান নেই।”

২০০৮ সালে এর বিরুদ্ধে একটি রিট আবেদন করেছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ, যা পরবর্তীতে আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। আপিল বিভাগ সে সময় বলেছিল, যেহেতু মামলাটি অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে, তাই তিনি (মওদুদ আহমেদ) চাইলে অভিযোগ গঠনের সময় বিষয়টি বিচারিক আদালতে উত্থাপন করতে পারেন।

আইনজীবী মাহমুদ বলেন, “সে অনুযায়ী গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আমরা বিচারিক আদালতে আবেদন করেছিলাম। বিচারিক আদালত সে আবেদনটি গত ৫ এপ্রিল খারিজ করে দেয়। এ অবস্থায় নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে গত মে মাসে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত হাই কোর্টে রিভিশন আবেদনটি করা হয়। যেটি আজকে সরাসরি খারিজ করে দিলেন উচ্চ আদালত।”

জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে সাত কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৮৭ টাকার সম্পদ অর্জন এবং চার কোটি ৪০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭৫ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলাটি করে দুদক। গত ২১ জুন ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।