নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, তাদের কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূলের সব কমিটিতে বর্তমানে ১৫ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তবে দলের নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদ কার্যনির্বাহী সংসদে এই হার প্রায় ১৯ শতাংশ।
২০২০ সালের মধ্যে সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়েছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো।
ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হাতে আছে মাত্র আড়াই বছর। কিন্তু অধিকাংশ দল গত নয় বছরে লক্ষ্যের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি।
এ অবস্থায় গত ১৩ জুন নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ৪০টি দলের কাছে ‘নারী প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্তির’ সর্বশেষ তথ্য চেয়ে তাগিদ দেয়।
এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের সর্বশেষ অবস্থান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে পৌঁছায়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০-এর খ-এর খ(২) অনুচ্ছেদে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ পদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং ২০২০ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্য অর্জনের কথা বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার চিঠিতে কমিশনকে জানিয়েছেন, ৬৪টি জেলা ও ১২টি মহানগর নিয়ে মোট ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি রয়েছে দেশের অন্যতম পুরনো এই রাজনৈতিক দলের।
এর বাইরে ৪৯০টি উপজেলা কমিটি, ৩২৩টি পৌরসভা ও ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়ন কমিটি এবং তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি পৌরসভা ও ইউনিয়নে ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে।
আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে সভাপতিসহ মোট ১৫ জন নারী। গত জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতে নারী সদস্যের হার ১৫ শতাংশ বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
তার চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন- বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগের শতভাগ সদস্য নারী। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব সৃষ্টি ও নারীর ক্ষমতায়নে সংগঠনগুলো কাজ করাছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের গবেষক ইমরান হোসেন ভুইয়া জানান, অধিকাংশ বড় দলেও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য কমিটিতে গড়ে ১১ শতাংশ পদে নারী সদস্য নেই এখনও। তৃণমূলের পরিস্থিতি আরও হতাশাজনক।
এই অবস্থায় ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন জানান, নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যপূরণ করতে না পারলে নিবন্ধন বাতিলের মতো কোনো নির্দেশনা আইনে নেই। তবে আরপিও সংশোধন করে আবার সময় বাড়ানোর বিষয়টি কমিশন বিবেচনা করতে পারে।