জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “অপরাধ করল তারা (ক্ষমতাসীন দল)। সবাই দেখেছে ভিডিও ফুটেজে, কারা কারা সেখানে ছিল। সমস্ত মানুষের ছবি, মানুষের চেহারা স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তারা সকলে ছিলো আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগের এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা। এটা সারা জাতি দেখেছে। এখানে তদন্ত করার কী আছে?
“তারা(সরকার) ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আরেকটি মামলা করেছে। এটা তাদের একটা কৌশল, এটা দুরভিসন্ধিমূলক।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও একই কথা বলেন।
“যখন সমালোচনার ঝড় বইছে; বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠনসহ নাগরিক সমাজ এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য সরকারকে ধিক্কার জানাচ্ছে। ঠিক তখনই হাছান মাহমুদ তার দলীয় ক্যাডারকে সিএনজির ড্রাইভার বানিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নামে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, লাজলজ্জ্বাহীন ও কাল্পনিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।”
পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটিতে যাওয়ার পথে গত ১৮ জুন রাঙ্গুনিয়ায় হামলার মুখে পড়ে মির্জা ফখরুল নেতৃত্বাধীন বিএনপির প্রতিনিধি দল।
বিএনপি এই হামলার জন্য ওই এলাকার আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদকে দায়ী করে আসছে। অন্যদিকে হাছানের দাবি, বিএনপির গাড়িবহরের ধাক্কায় দুজন আহত হলে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওই কাণ্ড ঘটায়।
বিএনপির পক্ষ থেকে মামলার পর বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে পাল্টা এক মামলায় বিএনপির রাঙ্গুনিয়ার নেতা-কর্মীদের আসামি করেন এক অটোরিকশা চালক।
পাল্টা মামলা দায়েরের সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “আওয়ামী লীগের স্বভাব তো আমরা জানি। তারা নিজেরা অপরাধ করে তারপরে যারা অপরাধ করে নাই, তাদের বিরুদ্ধে আরেকটা মামলা দাঁড় করাল।
“কারণ আদালতে গেলে সুবিধা পায় তারা। তারা বলবে যে, এখানে দুইটা মামলা হয়েছে। একটা মামলা পক্ষ, আরেক মামলা প্রতিপক্ষ করেছে। নিজেদের অবস্থানকে একটু সহজ করবার জন্য তারা এই কাজটা করে।”
স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত এই আলোচনা সভায় মওদুদ আগামীতে একদলীয়ভাবে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলেও সরকারকে হুঁশিয়ার করেন।
“যদি সরকার সমঝোতার মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন করতে রাজি না হয়, তাহলে আন্দোলনের বিকল্প জাতীয়তাবাদী দলের কাছে আর থাকবে না।”
দলের নেতা-কর্মীদের সেই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বানও জানান মওদুদ।
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা খালেদা ইয়াসমীন, নিপুর রায় চৌধুরী, শাহ নেসারুল হক, জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম বক্তব্য রাখেন।