আ. লীগ এবার যা করেছে তা অকল্পনীয়: খালেদা

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিখোঁজ ও নিহত নেতাকর্মীদের স্বজনদের নিয়ে ইফতারে খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ এবার ক্ষমতায় এসে যা করেছে তা তাদের কল্পনায়ও ছিল না।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2017, 02:49 PM
Updated : 20 June 2017, 02:58 PM

আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনা থেকে ক্ষমতাসীনরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গুম’ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

খালেদা বলেন, “তারা (সরকার) ভেবেছে যে, বিএনপিকে শেষ করতে গেলে এসব ভালো ছেলেদের শেষ করে ফেলতে হবে, তাহলে বিএনপি দুর্বল হবে, বিএনপির কিছু হবে না, তারা আজীবন ধরে ক্ষমতায় থেকে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন। সেজন্য তারা এসব কাজগুলো করেছিল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই।

“এর আগেও তারা (আওয়ামী লীগ) এসব করেছিল, কিন্তু এরকম হয়নি। এবার ক্ষমতায় এসে যা করেছে, তা অবর্ণনীয় ও অকল্পনীয়।”

আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে গেলে নিখোঁজ নেতাকর্মীদের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আশার কথা শোনান বিএনপি প্রধান।

তিনি বলেন, “আমরা এখনও আশা করি যে, তারা আছে, একদিন ফিরে আসবে। আপনারা দেখেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলেকেও (হুম্মাম কাদের) ধরে নিয়ে গেছিল, কয়েক মাস পর তাকে তার বাড়ির কাছে ফেলে দিয়ে গেছে। এরকম আরেকজন হলো খোকন।

“আমি আশা করছি, জালেম-অত্যাচারী বিদায় হলে দেশে তখন তাদের খোঁজ পাব, তখন তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। আমরা সেই আশায় আছি।”

নিখোঁজদের স্বজনদের সহমর্মিতা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “যারা হারিয়ে গেছে তারা শুধু আপনাদের ছেলে নয়, আমাদেরও ছেলে। তাদের স্নেহ করতাম, ওরা দলের জন্য অনেক কষ্ট করেছে।

“তারা (সরকার) যাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে, তারা জানত যে, এরা ভালো ছেলে, এরা কাজ করে দলের জন্য। ওরা ভেবেছে যে, এসব কর্মীদের শেষ করে ফেলতে পারলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে।”

মঙ্গলবার গুলশানের লেকশোর হোটেলে এই ইফতার মাহফিলে ‘গুম’ ও ‘খুন’ হওয়া নেতাকর্মীদের স্বজনদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার হাতে তুলে দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সম্প্রতি নিহত ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরুর শিশুকন্যা উম্মে হাবিবা মীম, সেলিম রেজা পিন্টুর বোন রেহানা পারভীন ‍মুন্নী, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আঁখি, নুরুজ্জামান জনির স্ত্রী মুনিয়া পারভীন, তিন মাস ১৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর ফিরে আসা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনও বক্তব্য রাখেন।

পরে মূল মঞ্চে দলের মহাসচিবসহ নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন, মাহবুব হাসান সুজনের মা রাশিদা বেগম, মো. জহিরের মা হোসনে আরা, এসএম আদনান চৌধুরীর বাবা রুহুল আমিন চৌধুরী, নাজমুলের স্ত্রী সাবিরা নাজমুল, নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী সুমী আখতারসহ নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।

এছাড়া নিখোঁজ ও নিহত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির চৌধুরী আলম, জাহিদুর করিম তানভীর, আলম হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মো. মাসুম. মো. শামীম, মাসুদ হোসেন, মারুফ শেখ, যুব দলের নুরে আলম, আফজাল হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনির, সেলিম শাহিন, মেহেদি আলম মাহাবি, স্বেচ্ছাসেবক দলের এম আদনান চৌধুরী, মো. কাউসার, শ্রমিক দলের ওয়াদুদ ব্যাপারী, ছাত্রদলের আসাদুজ্জামান রানা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, মো. আলামীন, মাহবুব হোসেন সুজন, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লা, কাজী ফরহাদ হোসেন, খালেদ হোসেন সোহেল, মো. সোহেল, মো. জহির, মো. পারভেজ হোসেন, মো. চঞ্চল, তরিকুল ইসলাম ঝন্টু, নিজামউদ্দিন মুন্না, তরিকুল ইসলাম তারা, মফিজুল ইসলাম রাশেদ, আবদুল কাদের ভুঁইয়া মাসুম, নুরুজ্জামান জনি, মাহবুবুর রহমান বাপ্পী, আমিনুল ইসলাম জাকির, মাসুদ রানা, মো. জিহাদুর রহমান, মো. রাহাত, মো. জসিম উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, মেহেদি হাসান রাজু, এহসানুল হক খোকন, মিজানুর রহমান টিটু, আরিফুল ইসলাম মুকুল, সাইফুর রহমান সজীব, মো. হাসান, ইফতেখার আহমেদ দিনারের পরিবারের সদস্যরা ইফতারে অংশ নেন।   

বিএনপি নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, কাজী আবুল বাশার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।