আদালতে খালেদার হাজিরা, তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আদালতে জেরার সময় মামলার আসামি বিএনপি চেয়ারপারসনও এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2017, 02:38 PM
Updated : 15 June 2017, 02:38 PM

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

দুদকের উপপরিচারক হারুন-অর রশীদকে জেরা আংশিক হওয়ার পর খালেদার আইনজীবী অসুস্থতার কথা জানালে শুনানি ২২ জুন পর্যন্ত মুলতবি করেন বিচারক মো. আকতারুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের ওই বিশেষ এজলাসে জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের পাশাপাশি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায়ও শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল।

খালেদা জিয়া দুপুর পৌনে ১২টায় আদালতে হাজির হন। এরপর বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে শুনানি হয়ে হয়ে তা পৌনে এক ঘণ্টাকাল চলে।

তদন্ত কর্মকর্তা হারুনকে জেরা শুরুর কিছুক্ষণ পর খালেদার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তিনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে দাবি করে তার সহযোগী আইনজীবীরা তখন শুনানি বন্ধ করে দেন। এরপর বিচারক শুনানি মুলতবি করেন।

এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় এদিন খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল।

হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিলের আবেদন করা হয়েছে এবং আগামী ৩ জুলাই তার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে জানিয়ে খালেদা সময়ের আবেদন করেন আকতারুজ্জামানের আদালতে। তখন তার শুনানিও মুলতবি হয়।

এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালত ছেড়ে গুলশানের বাসার দিকে রওনা হন বিএনপি চেয়ারপারসন।

তার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে এদিন বকশী বাজার এলাকায় নিরাপত্তা ছিল জোরদার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক সদস্য মোতায়েন ছিলেন আদালতের ভেতরে-বাইরে।

দলীয় চেয়ারপারসনের হাজিরার দিনে বিএনপির বহু নেতা-কর্মী আদালতে জড়ো হয়েছিলেন। এরমধ্যে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবীর রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর মো. নাছিরউদ্দিন, তৈমুর আলম খন্দকার প্রমুখ।

বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন মুহাম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের অর্থ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মামলাটি কের দুদক।

এতে খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলার আসামি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি হয়।

২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এ মামলা দায়েরের পর ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়।

এই মামলায় খালেদার ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।