শনিবার দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট’ শিরোনামে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে হলে ইভিএম মেশিন বা ব্যালট পেপার কোনো ইস্যু নয়, প্রয়োজন এক স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশনের।
২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এরপর স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে সফলভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও কারিগরি ত্রুটি নিয়ে নির্বাচন কমিশন-বুয়েট দ্বন্দ্বে এর ব্যবহার আটকে যায়।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে গত ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গত ১১ মে সিইসি কে এম নূরুল হুদা এক অনুষ্ঠানে জানান, রাজনৈতিক দল ও সরকার চাইলে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি শুরু থেকেই ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে। ইভিএমে আপত্তির বিষয়টি জানিয়ে দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতামতের প্রেক্ষিতে মঈন খান বলেন, “ইভিএম নিরীক্ষার জন্য যখন সাধারণের সামনে আনার দাবি উঠেছে, তখন তা না করে সরকার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করছে না।”
ইভিএম পদ্ধতিতে এক লাখ ভাগের দশমিক এক ভাগ ভুল হলেও তা জনগণের ভোটাধিকারকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন তিনি।
নির্বাচন স্বচ্ছ করতে হলে ইভিএম ছাড়াও অনেক পদ্ধতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে মানুষের ভোটাধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। বহির্বিশ্ব চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো। এসব প্রশ্নের সমাধান না করে নতুন এই ভোটিং পদ্ধতি নির্বাচন পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সরকার ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে সুপারিশ করলেও সেটি ত্রুটিপূর্ণ করার পক্ষে।
“সরকার মনে করছে, ইভিএম ব্যবহার করলে সেই নির্বাচন স্বচ্ছ হবে। এতে ভোটার আইডি রিকগনাইজ করার পাশাপাশি ভোট ম্যানিপুলেটিংয়ের কোনো সুযোগ থাকবে না। কেউ তখন আর ভোটগ্রহণকে প্রভাবান্বিত করতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চাইছেন, সব দল অংশগ্রহণ করুক নির্বাচনে। বিএনপি বলছে, ৩০০ আসনের বিপরীতে তাদের ৯০০ প্রার্থী প্রস্তুত।সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রতিটি সরকারের রুটিন ওয়ার্ক।”
নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিএনপি একটি ‘সহায়ক সরকারের’ দাবি করলেও তার সংজ্ঞা নির্ধারণ না করায় বিএনপির সমালোচনা করেন তিনি।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মঈন খানের মতো তিনিও একটি স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।
অনু্ষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় পরাজিত করে প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়কে।