আ. লীগের সদস্য হতে তরুণদের উৎসাহিত করবে ছাত্রলীগ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে তরুণদের আওয়ামী লীগের সদস্য হতে উৎসাহিত করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

এ লক্ষে রোববার থেকে দুইদিনব্যাপী বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় ও ১০৯টি জেলা ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদকদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ।

শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জয় এবং যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকসহ বাঙালি তিন নারীকে শুভেচ্ছা জানান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করা ছাড়াও ছাত্রলীগও সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করবে।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি জানান, রোববার ও সোমবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অতিথি হিসেবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।

বর্ধিত সভা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ১০৯টি জেলা ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদকরা অংশ নেবে।

বর্তমান কমিটির এটি দ্বিতীয় বর্ধিত সভা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ বলেন, “আমরা গত বছর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যস্ততা সত্ত্বেও নিয়মিত বর্ধিত সভা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা করেছি।

“এবার দুই দিনব্যাপি বর্ধিত সভায় কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গতিশীল করার লক্ষে নেতা-কর্মীদের প্রতি দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ থাকবে। থাকবে একজন ছাত্রনেতার চারিত্রিক গঠন, ব্যক্তিত্ববোধ সৃষ্টিসহ নানা দিক নির্দেশনা।”

তিনি বলেন, “জাতির পিতার আদর্শের এই সংগঠনের প্রতিটি নেতা-কর্মী হয়ে উঠবে একজন সুনাগরিক। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা চেয়েছেন, ছাত্রলীগই সেটা বিনির্মাণ করতে পারবে।

“ছাত্রলীগের প্রতি যেমনি জাতির পিতার আস্থা ছিল, তেমনি ছাত্রলীগও জাতির পিতার প্রধান সিপাহসালারের ভূমিকায় ছিল। একইভাবে এখনও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয় সুনিশ্চিত করতে এই সংগঠনের প্রতিটি নেতা-কর্মী প্রস্তুত।”

দুই বছরে সাংগঠনিক ভাবে এ পর্যন্ত ৩৭টি জেলার সম্মেলন সফল ভাবে করা হয়েছে বলেও জানান সোহাগ।

আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে তরুণ ভোটারদের আওয়ামী লীগে টানতে ছাত্রলীগ কিভাবে সহায়তা করবে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার জন্য তরুণ ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপকার দেশরত্ম শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণরা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল। একই ধারাবাহিকতা ২০১৪ সালেও ভোট দিয়েছেন। বর্তমান সরকার তরুণদের কর্মসংস্থান করে দিচ্ছে। শিক্ষায় সবোর্চ্চ বরাদ্ধ দেওয়া হচ্ছে। কাজেই তরুণরাই আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে।

“১৮ বছর হলেই ভোটার হয়। অনেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত। আবার কেউ কেউ রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন। এসব মানুষদের আমরা আওয়ামী লীগে সদস্য করতে সহায়তা করব। বর্ধিত সভায় সরকারের উন্নয়ন প্রচারের পাশাপাশি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।”

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আওয়ামী লীগ যেমন সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করছে, আমরাও সদস্য সংগ্রহ করব। আগামীকালে বর্ধিত সভায় সেসব বিষয়গুলো থাকবে। একই সঙ্গে শিক্ষাসহ সরকারের গৃহীত উন্নয়ন এবং বিএনপি জামায়াতের ধ্বাংত্মক কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরে একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে যা যা করা দরকার তা করা হবে।”    

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, আবদুল বাছেদ গালিব, আদিত্য নন্দী, মাকসুদ রানা মিঠু, মেহেদী হাসান রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মো. নিজামুল ইসলাম, চন্দ্র শেখর মণ্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জসিম উদ্দিন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইমরান খান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, উপ দপ্তর সম্পাদক গোলাম ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।