দ্রুত বিচার আইনে সাজা বাড়ানো ক্ষমতা হারানোর ভয়ে: খন্দকার মাহবুব

সরকার ‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে’ দ্রুত বিচার আইনের সাজার মেয়াদ বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2017, 08:30 AM
Updated : 9 June 2017, 08:34 AM

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী আইন (দ্রুত বিচার) পুরনো আইন। ২০০২ সালে বিএনপি সরকার স্বল্পমেয়াদি স্বল্প সাজা দিয়ে এই আইনটি যখন করেন তৎকালীন সাময়িক অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য। তখন আওয়ামী লীগ এটাকে কালো আইন বলে সংসদ অধিবেশন বয়কট করেছিল।

“আওয়ামী লীগ এমন একটি দল- যখন যেমন, তখন তেমন। তখন ছিল সেটা কালো আইন। এখন তারা ক্ষমতায় এসে সেই আইনের সাজা আরো বাড়িয়ে করছে সাত বছর। কেন করছে বৃদ্ধি? প্রকৃতপক্ষে তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছে, অস্বাভাবিকভাবে বেসামাল হয়ে হয়ে গেছে। কখন কী করেন, কখন কী বলেন হদিস নাই।”

জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক সভায় সোমবার মন্ত্রিসভা সাজার মেয়াদ বাড়াতে ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন-২০১৭’ এর খসড়া প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়।

২০০২ সালে কার্য্কর হওয়া দ্রুত বিচার আইনে এতদিন সাজা ছিল সর্বনিম্ন দুই বছর এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদন্ড। সংশোধিত খসড়ায় এ সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন দুই বছর ও সর্বোচ্চ সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘দ্রুত বিচার আইনের শাস্তির মেয়াদ বৃদ্ধি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং জনমনে আশঙ্কা’ শিরোনামে এই আলোচনা সভা হয়।

এতে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব বলেন, “সরকারকে বলতে চাই, দেশের মানুষ অত্যন্ত ধৈর্যশীল, তারা যখন জেগে উঠবে, তখন কোনো বাঁধন মানবে না। আপনাদের অত্যাচার-নির্যাতন-হত্যা-গুম করছেন।”

“আপনারা ভাবছেন, দ্রুত বিচার আইনের সাজা বাড়িয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছেন- এবার কিন্তু পাঁচ বছর থেকে সাজা সাত বছর করেছি, আর রক্ষা নেই। আমি বলতে চাই, জনগণের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তারা প্রতিরোধ করবেই।”

আইনি লড়াইয়ে হারার পর গুলশানে বাড়ি থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদকে ‘ভদ্রভাবে’ উচ্ছেদ করা হয়নি বলেও অনুষ্ঠানে দাবি করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‍“মওদুদ সাহেব একটা বাড়িতে ছিলেন, সেটা বৈধ না অবৈধ সেটা অন্য ব্যাপার। কথা হল মওদুদ আহমদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, একজন প্রবীণ আইনজীবী, বাংলাদেশের একজন উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী অনেক কিছু ছিলেন।

“তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে, করেন- কিন্তু ভদ্রতা বলে তো একটা জিনিস আছে। জঙ্গি আইন বলে কিছু নাই। হঠাৎ করে বিনা নোটিশের তার বাড়িতে হামলা হল, ডাকাত পড়ার মতো তার মালপত্র সব কিছু বের করে দেওয়া হল। এটা কোন জঙ্গি আইন, কোন আইনের শাসন। কোনো সভ্য সমাজে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে বুঝা যায়।”

‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’র সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।