হেফাজত আমির শফীকে দেখতে হাসপাতালে ফখরুল

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীকে দেখতে গিয়ে তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2017, 09:07 AM
Updated : 8 June 2017, 09:31 AM

বৃহস্পতিবার দুপুরে গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে যান ফখরুল। দলের ভাইস চেয়ার‌ম্যান মীর মো. নাসিরও তার সঙ্গে ছিলেন।

ওই হাসপাতালের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৯৫ বছর বয়সী মাওলানা শফীকে।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়।

মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আল্লামা শফী সাহেব অত্যন্ত অসুস্থ। এই হাসপাতালে আইসিইউতে আছেন। আমরা দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি এখনো অত্যন্ত সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন।

“চিকিৎসকরা বলেছেন, এখানে আসার পর অবস্থা কিছুটা উন্নতি করছে। তবে সময় লাগবে। আমরা আশা করছি, তার অবস্থার উন্নতি হবে এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ছবি)

শারীরিক দুর্বলতা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১৮ মে থেকে চট্টগ্রাম নগরীর প্রবর্তক মোড়ের সিএসসিআর নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন আহমদ শফী। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় আনা হয়।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর কওমি মাদ্রাসা দারুল উলুম মইনুল ইসলাম এর মহাপরিচালক শফী তার ঘরানার মানুষের কাছে যেমন শ্রদ্ধেয়, তেমনি নারী বিরোধী নানা বক্তব্যের কারণে বিতর্কিতও।

বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড হেফাজত আমিরের চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছে।

হাসপাতালের চিকিৎসক এ আর এম নূরুজ্জামানের উদ্ধৃতি দিয়ে মাওলানা শফীর বড় ছেলে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, “তিনি (হেফাজত আমির) ইউরিন ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন।

“শুরুতে তার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন হলেও বর্তমানে তিনি আগের চেয়ে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন। কিন্তু এখনও তিনি আশঙ্কামুক্ত নন।”

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম তিন বছর আগে ঢাকার মতিঝিলে সমাবেশ থেকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে আলোচনায় আসে।

২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের বিরুদ্ধে মাঠে নামা সংগঠনটি ওই বছরের ৫ মে ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তি ও নারীনীতি বাতিলসহ ‘বিতর্কিত’ ১৩ দফা দাবিতে মতিঝিলে সমাবেশ ডেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়, সংঘাতে নিহত হন বেশ কয়েকজন।

সুপ্রিম কোর্টের সামনে রোমান ‍যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’ আদলে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে ফের মতিঝিলে সমাবেশের হুমকি দিয়ে সম্প্রতি আবার আলোচনায় আসে মাওলানা শফীর হেফাজত।

এরপর গত মাসে গণভবনে কওমী মাদ্রসাগুলার শীর্ষ প্রতিনিধি এবং শাহ আহমদ শফীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে বলেন। এরপর গত ২৬ মে রাতে ভাস্কর্যটি আদালত প্রাঙ্গণের সামনে থেকে সরিয়ে দুদিন পর ভেতরের অ্যানেক্স ভবন প্রাঙ্গণে পুনস্থাপন করা হয়।