দৃষ্টি ফেরাতেই ব্যাংক হিসাবে বাড়তি শুল্ক: আব্বাস

বাজেটের বিশাল ব্যয় থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে রাখতেই ব্যাংক হিসাবে বর্ধিত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে মন্তব্য করেছেন করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2017, 11:40 AM
Updated : 5 June 2017, 11:40 AM

সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, বাজেটে যদি কোনো রকম অসামঞ্জস্য কিছু থাকে, তা আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কেন? সেটা আগে আলোচনা করে ঠিক করা যেত না। আসলে আপনারা এটা রেখে দিয়েছেন এজন্য যাতে অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা না হয়।

“আপনারা ব্যাংকের হিসাবের ওপর এই আবগারি শুল্ক উঠাবেন, এটা রাখার কোনো সুযোগ নাই। কারণ এই যে লাখ টাকার যারা মালিক এরাই কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ। কোটি টাকার মালিকরা কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। ভোটের সংখ্যা ওদের হাতে বেশি। ভোটের হিসাবে এই আবগারি শুল্ক আপনাদের উঠাতেই হবে। এই সরকার জনগণের সঙ্গে রীতিমত মস্করাই করছে।”

সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে দেশপ্রেমিক ফোরামের উদ্যোগ দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা আরোপ করা হয়েছে।

১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে করেছেন না। তারা বলছেন, লেনদেনের অবৈধ মাধ্যম উৎসাহিত হবে।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংকে যাদের এক লাখ টাকা রাখার সামর্থ্য আছে তারা সম্পদশালী। তারা বাড়তি ভারটা বহন করতে পারবেন, সমস্যা হবে না।

মির্জা আব্বাস বলেন, “এক লাখ টাকার আবগারি শুল্ক ৮০০ টাকা অর্থমন্ত্রীর কাছে বিশেষ কোনো টাকা নয়। আমার ভয়টা অন্য জায়গায় যে, উনারা এই বাজেটে এমন অপকর্ম করেছেন, চুরি করার জন্য চোরাই রাস্তা রাখা হয়েছে- এই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এক লাখ টাকার ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন। যাতে আমরা এটা নিয়ে ব্যস্ত থাকি, অন্যদিকে না তাকাই।”

কারাবন্দি নেতা বরকতউল্লাহ বুলু‘র মুক্তির দাবি জানিয়ে আব্বাস বলেন, “এভাবে নেতাকর্মীদের বন্দি করে, মামলা দিয়ে কতদিন থাকবে সরকার। আমাদেরকে এখন ইফতার পার্টি করতে দেওয়া হয়, সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না। আমি বলতে চাই, এভাবে সমস্ত কিছু আটকিয়ে ফেলার পরিণতি শুভ নয়। একদিন এর বিস্ফোরণ ঘটবেই।”

সংগঠনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টার সভাপতিত্বে ও এম এ কাইয়ুমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।