রোডম্যাপের আগেই সংলাপ উচিত ছিল: মওদুদ

একদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যেই ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণা করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই রোডম্যাপের আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসা উচিত ছিল নির্বাচন কমিশনের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 03:08 PM
Updated : 27 May 2017, 03:08 PM

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ওই রোডম্যাপ দিয়ে কী হবে যদি দেশে একটা সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও অবাধ নির্বাচন না হয়? রোডম্যাপ দেওয়ার আগে তাদের উচিত ছিল, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা।

“এখন তারা (ইসি) বলছেন, আলোচনা করবেন। রোডম্যাপ দেওয়ার পরে আলোচনা করার চাইতে আগে আলোচনা করা উচিত ছিল।”

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী দেড় বছরের কাজের খসড়া সূচি (রোডম্যাপ) গত ২৪ মে ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভোট শেষ করতে এ বছরের জুলাই থেকে আগামী বছর ভোটের তফসিলের আগ পর্যন্ত সময়ের করণীয় ঠিক করা হয়েছে ওই রোডম্যাপে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জিয়া পরিষদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মওদুদ আহমদ।

বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘নিরপেক্ষ’ নন অভিযোগ করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, “এটি একটি অগ্রহণযোগ্য কমিশন। তারা এই সরকারের কথা অনুযায়ী, নির্দেশ অনুযায়ী চলে।

“প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমরা চিনি, তিনি একজন পক্ষপাতী ব্যক্তি। তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, যে কারণে আমরা তাকে গ্রহণ করতে পারি নাই।

“যেভাবে ইসি গঠন করা হয়েছে, তা দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে করা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি না।”  

কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না বলে মন্তব্য করেন মওদুদ।

“আমাদের ইতিহাস বলে- ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যখনই কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল, তখন নির্বাচন কমিশন কখনোই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে নাই।

“১৯৯১, ১৯৯৬ সালের জুন মাস এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের সময়ে দলীয় সরকার ছিল না বলেই নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছে।

বিষয়টা নির্বাচন কমিশন নয়, বিষয় হলো নির্বাচনকালীন সময়ে কোন ধরনের সরকার থাকবে। তার উপরে নির্ভর করবে দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে কি হবে না।”

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তার দলের অবস্থান তুলে ধরে মওদুদ বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে। তবে ‘একদলীয়ভাবে’ কোনো নির্বাচন এবার বাংলাদেশের মাটিতে হতে দেওয়া হবে না।

“এই নির্বাচনে যে অকুণ্ঠ সমর্থন বিএনপির রয়েছে, এই সমর্থনের প্রতিফলন আগামী নির্বাচনে ঘটাতে হবে। সেজন্য আমরা আন্দোলনের কথা বলেছি, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতির কথাও বলেছি।

“আন্দোলন এজন্য যে, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। আর আমরা নির্বাচন করব এজন্য, সেই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব, যাতে করে সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরকার গঠন করতে পারে।”   

  জিয়া পরিষদের যুগ্ম-মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান কবির মুরাদ।

অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক এসএম হাসান তালুকদার, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক তাহের আলী, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক জি কিউ মুস্তাফিজুর রহমান, আইনজীবী মাহফুজুর রহমান ফরহাদ এবং অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ আলোচনায় অংশ নেন।