বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণের ‘পাঁয়তারা’ করছে সরকার: মওদুদ

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সাংবিধানিক সব সংস্থাসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে নিলেও বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2017, 06:18 PM
Updated : 26 May 2017, 06:18 PM

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির কারাবন্দি ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

সরকার বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণের ‘পাঁয়তারা’ করছে অভিযোগ করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “এই সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং তা করেছে।

“প্রশাসন, র্যা ব-পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ যত কমিশন আছে, সবই তারা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন বাকি আছে শুধু বিচার বিভাগ।”

বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যেই সরকার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনেছে বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার।

“বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়টি সংসদ ব্যবস্থা করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। যেই সংসদ নির্বাচিত সংসদ নয়, সত্যিকার প্রতিনিধিত্বকারী সংসদ নয়। এই সংসদ যতগুলো সংশোধনী এনেছে, বিশেষ করে পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনী… বিএনপি যদি কোনোদিন ক্ষমতায় যায়, এসব সংশোধনী পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেবে।”

‘বরকতউল্লাহ বুলু মুক্তি পরিষদ’ আয়োজিত সমাবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপে ‘দশম জাতীয় সংসদের মতো আগামীতেও একদলীয়’ নির্বাচন করার চেষ্টা দেখছেন মওদুদ।

তিনি বলেন, “এই নির্বাচন কমিশন একটি অগ্রহণযোগ্য কমিশন। এটি নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশন নয়, এটি সরকারের একটি তল্পিবাহক কমিশন।

“এই রোডম্যাপ দিয়েছেন… যাতে তারা কীভাবে একদলীয়ভাবে আগামীতে একটা নির্বাচন করা যায়, সেটার রূপরেখা দিয়েছেন।”

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৪ মে আগামী দেড় বছরের কাজের খসড়া সূচি (রোডম্যাপ) ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভোট শেষ করতে এ বছরের জুলাই থেকে আগামী বছর ভোটের তফসিলের আগ পর্যন্ত সময়ের করণীয় ঠিক করা হয়েছে ওই রোডম্যাপে।

দেশে আগামীতে আর কোনো একদলীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

“বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন করবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।”

বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা শিগগিরই দেওয়ার কথা জানান তিনি।

বরকতউল্লাহ বুলু ও খায়রুল কবির খোকনসহ কারাবন্দি সব বিএনপি নেতার মুক্তি দাবি করেন মওদুদ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘বরকতউল্লাহ বুলু মুক্তি পরিষদের’ সভাপতি আকবর হোসেন ভুঁইয়া নান্টু।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল ও শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি সমাবেশে বক্তব্য দেন।