এত বিদ্যুৎ গেল কই: নজরুল

হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ানো হলেও দেশজুড়ে তাপদাহের মধ্যে লোডশেডিং কেন হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2017, 03:15 PM
Updated : 24 May 2017, 05:42 PM

বুধবার বিকালে ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “কোনো হিসাব মেলানো যায় না। এই যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ কইরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হল শুনলাম, ভাসায়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুতে। এই যে বিদ্যুৎ নাই এখন, তাহলে হিসাবটা বুঝতেছি না।

“সেই নাসিরউদ্দিন হোজ্জার বিড়াল আর মাংসের গল্পের মতো আর কি। বিড়ালের ওজন যদি একসের হয় তাহলে মাংস কই গেল? আর এটা যদি মাংসের ওজন হয়, তাহলে বিড়াল গেল কোথায়? তাহলে আমাদের এই হাজার হাজার কোটি টাকা কই গেল এটা? বিদ্যুৎও তো পাচ্ছে না জনগণ।”

গ্রীষ্ম মৌসুমে তৃতীয় দফায় তাপপ্রবাহ চলছে দেশজুড়ে, তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। এরমধ্যে দুয়েকটি শহর বাদে দেশের অধিকাংশ এলাকায় দিনে বেশ কয়েক বার লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মাইলফলক ছোঁয়ায় গত ৮ডিসেম্বর হাতিরঝিলে রঙিন বাতি জ্বালিয়ে আলোর উৎসব করা হয়। তবে এখন চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের যোগান হচ্ছে না। বুধবার সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৮৬৪৮ মেগাওয়াট সর্বোচ্চ উপাদনের আভাস দিয়েছে পিডিবি। সে হিসাবে ঘাটতি এক হাজার ৫২ মেগাওয়াট, আর লোডশেডিংয়ের আভাস রয়েছে ৯৭৯ মেগাওয়াটের। 

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলছেন, বিদ্যুতে বিপুল অংকের বিনিয়োগ এবং সেই হিসাবে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিয়ে সরকারকে একদিন জবাব দিতে হবে।

নজরুল ইসলাম খান (ফাইল ছবি)

“এজন্য একদিন না একদিন তাদের হিসাব দিতে হবে। হিসাব দিতে ভয় পাচ্ছে বলেই তারা নানা রকম ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায় কি না, আবার একা একা নির্বাচন করে ‘আমরা আর মামারা’ ইলেকশন কইরা জিতা যায় কি না ২০১৪ সালের মতো-এ রকম ষড়যন্ত্র আছে ও চক্রান্ত আছে। আমাদের হুঁশিয়ার থাকতে হবে।”

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির প্রতিবাদে এই আলোচনা সভা হয়।

গুলশানের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এটাতে সরকারের কোনো লাভ হয় নাই। কখন মানুষ এ রকম বেপরোয়া কাজ করে, যখন  মানুষ অস্থিরতায় ভোগে। এখন বিএনপি ভিশন ২০৩০ দিয়েছে, বিএনপি এসব বিষয়ে যেসব কথা-বার্তা বলছে, এগুলোতে তারা অস্থিরতায় পড়ে গেছে।

“আমরা বলতে চাই, জনগণের হৃদয় স্পর্শ করতে পারে নাই আওয়ামী লীগ। তারা কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করে নাই তা না, কিন্তু তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দুর্নীতি-অনাচার করতেছে, তা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।”

সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নাল আবেদীন, শিরিন সুলতানা, শাহ মো. আবু জাফর, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, সহ-সভাপতি আবুল হোসেন বক্তব্য রাখেন।