সোমবার ক্ষমতাসীন দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন দুজন নেতা।
আওয়ামী ওলামা লীগ নামে সংগঠনটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখা গেলেও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে তাদের সুর মিলে যাওয়ার পর সমালোচনার মুখে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলের সঙ্গে এই সংগঠনটির কোনো সম্পর্ক নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ওলামা লীগের মতো সংগঠনগুলোকে ‘দোকান’ আখ্যায়িত করে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথাও বলেন।
সোমবারের বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক আগেই ওলামা লীগের কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
“তবে তাদেরকে কীভাবে নতুন কোনো প্ল্যাটফর্মে আনা যায়, সে বিষয়ে আমাদের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আজকের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উত্থাপন করেছেন। সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভবিষ্যতে কোনো নামে তাদেরকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হবে।”
আওয়ামী লীগ স্বীকৃতি না দিলেও দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করে ওলামা লীগের কার্যক্রম চলছে।
বছর খানেক আগে সংগঠনটির অন্তর্কোন্দলে দুটি ধারা তৈরি হয়। একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন ইলিয়াস হোসাইন বিন হেলালী ও মো. দেলোয়ার হোসেন, অন্য অংশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আক্তার হোসেন ও আবুল হাসান।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরাতে প্রতি সপ্তাহেই কর্মসূচি পালন করে আসছে ওলামা লীগ। পাঠ্যপুস্তকে সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এই সংগঠন পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধিতাও করে আসছে।
আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওলামা লীগ নামে আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গ সংগঠন নেই। তবে তাদেরকে নতুন নামে নতুন একটি সংগঠনে যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।”
তিনি বলেন, “ওলামা লীগের দুই অংশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মারামারিতে লিপ্ত হওয়ার পরে নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, ‘এই ওলামা লীগ নামের সংগঠনটির দরকার নেই’।
“কয়েকদিন পর নেত্রী আমাদের বলেছেন, ইসলামী চিন্তা চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী লোকদেরকে কীভাবে এক ছাতার নিচে আনা যায়, তা নিয়ে ভাবতে।”
ওই পরামর্শের আলোকেই সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে ওলামাদের নিয়ে নতুন সংগঠন গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান গোপালগঞ্জের নির্বাচনী এলাকায় শেখ হাসিনার প্রতিনিধি শেখ আবদুল্লাহ।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের দাবি মেনে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণ এবং কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের সমালোচনার মধ্যেই ওলামাদের নিয়ে নতুন সংগঠন করার পরিকল্পনার খবর এল।
হেফাজতের দাবি মেনে নেওয়ার মধ্যে আওয়ামী লীগের আদর্শচ্যুতির শঙ্কা উঠেছে তার জোট সঙ্গী দলের মধ্য থেকেও; তবে আওয়ামী লীগ নেতারা সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে আসছেন।