শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য ইভিএমের বিরুদ্ধে দলের এই অবস্থান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “ইভিএম দিয়ে ভোট- এটা একটা ষড়যন্ত্র। আপনারা ফ্রান্সের নির্বাচন দেখেছেন টিভিতে, অন্যান্য দেশেও ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার দিয়ে মানুষ ভোট দেয়।
“আমাদের মতো দেশে ইভিএম ইন্ট্রোডিউস করার যারা চিন্তা করছেন, জনগণকে ভোটদানে বিরত রাখার জন্য এবং বঞ্চিত করার জন্য তারা এই ধরণের কৌশল গ্রহণ করেছে।”
২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এরপর স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে সফলভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও কারিগরি ত্রুটি নিয়ে নির্বাচন কমিশন-বুয়েট দ্বন্দ্বে এর ব্যবহার আটকে যায়।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে গত ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়।
নতুন কমিশন ভোট আয়োজনের যে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে, তাতে ডিজিটাল ভোটিং পদ্ধতি হিসেবে ইভিএম নিয়ে প্রস্তুতির জন্যও সময় রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ইভিএম নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের ভাবনা চলছে। পরীক্ষামূলক ব্যবহারের পর রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা পেলেই তা ব্যবহার করা যাবে।
বিএনপির ‘ইভিএমবিরোধী’ অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মওদুদ বলেন, নির্বাচন হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মধ্যে, ব্যালট পেপার দিয়ে। দেশের মানুষ অবাধে স্বেচ্ছায় নিজের ভোট নিজে দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে।
একাদশ নির্বাচনে নিজের দল অংশ নেবে জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, “ইনশাল্লাহ আমরা এই নির্বাচনে অংশ করব, একদলীয় কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে আর হবে না।”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি টিচার্সের (এগ্রিকালচারাল সায়েন্স) ‘বাংলাদেশে কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়ার নীতি ও কর্মসূচি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পড়েন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এসএম গোলাম হাফিজ কেনেডী।
সভায় মওদুদ বলেন, “দেশে আজ কোনো রাজনীতি নাই। যে রাজনীতি আছে সেটা অপরাজনীতি। তার দৃষ্টান্ত অনেক আগে আপনারা দেখেছেন, আজকে সকাল বেলাও (গুলশান কার্যালয়ে) দেখেছেন। এই হীনমন্যতা, এই ছোট মনের রাজনীতি, এই যে স্পর্শকাতরতা, এই যে প্রতিহিংসার রাজনীতি, এই রাজনীতির আমরা অবসান চাই।
“গুলশানের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।”
সকালে গুলশানের কার্যালয়ে পুলিশের ‘নিষ্ফল’ তল্লাশি অভিযানের সমালোচনা করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বাংলাদেশের পুলিশ একটা লাঠিয়াল বাহিনী আওয়ামী লীগের, প্রধানমন্ত্রীর লাঠিয়াল বাহিনী। এই লাঠিয়াল বাহিনী বলেই একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি দেশ চালিয়েছেন, যিনি আইনের শাসনের রক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন তার কার্যালয়ে হানা দিয়েছে।
“এটি কাপুরষোচিত, অন্যায়। এটা আওয়ামী সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের একটা অংশ বলে আমরা মনে করি।”
অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি টিচার্সের (এগ্রিকালচারাল সায়েন্স) সভাপতি কৃষিবিদ অধ্যাপক ইদ্রিস মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, অধ্যাপক শাহ মো. ফারুক, অধ্যাপক সিরাজুল করীম, অধ্যাপক ফারুক হাসান, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এ কুদ্দুস, অধ্যাপক নুরুল আলম, অধ্যাপক সহিদুল ইসলাম, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, অধ্যাপক আবদুল লতিফ ও অধ্যাপক শওকত আলী বক্তব্য দেন।