বৃহস্পতিবার সন্ধায় রাজধানীর রমনা গ্রিন রেস্তোরাঁয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল শাখার ছাত্রলীগ নেত্রীদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে এ ধরনের প্রতিবাদের কারণে জনভোগান্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর কেন হবে? কেন অবরোধ হবে? একটা মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে গিয়ে অবরোধে আটকা পড়া মুমূর্ষু রোগী মারা গেলে তখন কী হবে?
রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর হাসপাতালে ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
মৃত আফিয়া আক্তার প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আফিয়া ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাকে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকরা বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
জবাবে কাদের বলেন, “এগুলোর প্রতিক্রিয়া দেবে হাছান, তার ওপরে হানিফ, আরও উপরে আমি দেব।”
রিজভী তার ওই বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য দলের ভেতরের ষড়যন্ত্রকারীদের শেখ হাসিনা দায়ী করলেও তখনকার বিতর্কিত ভূমিকা পালনকারীদের এখন সঙ্গে রাখা হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বিষয়টি কারণ জানতে চেয়েছিলেন।
হাওর অঞ্চলের দুর্গত মানুষের ত্রাণ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা কাদের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাওরে গিয়েছেন কি না সেই প্রশ্ন তুলেন।
“বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একবার হাওর অঞ্চলে গিয়েছিলেন। তিনি দুর্গত মানুষের কোনো সাহায্য দেননি। যারা সেখানে সাহায্য নিতে এসেছিল তারা খালি হাতে ফিরে গেছেন। আসলে তিনি গিয়েছিলেন সেখানে ফটোসেশনের জন্য। এর পর ঢাকায় এসে এটা নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন।”
কাদের বলেন, “বিএনপি যে গণতন্ত্রের কথা বলে, আসলে তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি ‘ভূতের মুখে রাম নাম। তারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলে। তাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিলো রাতের বেলায় কার্ফিউ আর দিনের বেলা খাল কাটা।”
বিএনপির গণতন্ত্রকে ‘ম্যাজিকের তাস’ আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন তারা বর্জন করল গণতন্ত্র উদ্ধার করবে বলে। তখন তারা কত মানুষ পুড়িয়ে মারল। তারা ১৬৫ জন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করল। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালালো।
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, “ছাত্রলীগের নেতাদের আকর্ষণীয় হতে হবে। মেধা, বুদ্ধি, যোগ্যতা, দক্ষতা দিয়ে তাদের আকর্ষণীয় হতে হবে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এমন কিছু করা যাবে না যাতে শেখ হাসিনার সুনাম নষ্ট হয়। ছাত্রলীগের দুই এক জনের খারাপ আচরণে শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অর্জন যেন নষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ রাখাতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সামছুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি বক্তব্য রাখেন।