২০ দল আন্দোলনের জোট, সরকার গঠনের জন্য নয়: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে তাদের যে ২০ দলীয় জোট, তা ‘আন্দোলনকেন্দ্রিক’, এর সঙ্গে আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো সম্পর্ক নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 07:14 PM
Updated : 14 May 2017, 07:29 PM

জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় একথা বলেন তিনি।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সভায় বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করবেন, মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত রকম গৌরব ফিরিয়ে দেবেন। জামায়াতে ইসলামীসহ?”

বিএনপি আগের মতো জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করলে দলটি যুদ্ধাপরাধীর বিচার আটকে দিয়ে বিএনপি কী করবে, সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।

জবাবে ফখরুল বলেন, “একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারটি ২০৩০ সালে বোধহয় আসার প্রয়োজন নাই। এজন্য যে জামায়াত, ২০ দল, আমাদের সঙ্গে তাদের যে ঐক্য, এই ঐক্যটা সম্পূর্ণভাবে আন্দোলনকেন্দ্রিক।

“যখন ২০ দল গঠন করা হল, তখন বলা হয়েছিল, এই জোট গঠন করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের একনায়কেতন্ত্র, স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার গঠন প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে একটা আন্দোলন সৃষ্টি করতে। ২০৩০ সালে জামায়াতের সাথে আমাদের সম্পর্ক কী হবে, সে সম্পর্কে বোধহয় এখানে কথা বলার অবকাশ নেই।”

‘সেন্টার ফর ন্যাশনাল অ্যান্ড রিজিওনাল রিসার্চ স্টাডিজ-সিএনআরআরএস’ এর উদ্যোগে বিএনপির ‘ভিশন ২০৩০’ নিয়ে এই আলোচনা সভা হয়।

ফখরুল বলেন, “২০৩০ সা্লের যে ভিশন, যে কথা বলা হয়েছে, একটি স্বপ্ন। আমরা অন্ধকারের গহ্বরের শেষে একটা আলোর রেখা দেখতে চাই।

“আমাদের বয়স শেষের দিকে। দেশনেত্রী তার জীবনের সায়াহ্নে আছেন। এখন তিনি জাতির সামনে কিছু দিতে চান, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে যে কথা বলতে চান, এসো তোমরা স্বপ্ন দেখ। সেই স্বপ্নকে আমরা এইভাবে দেখতে চাই।”

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন রেখে মান্না বলেন, “আট বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর শাসন দেখবার পরে আপনারা বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করতে হবে।

“তিনবার প্রধানমন্ত্রী তো আপনিও ছিলেন, এই ক্ষমতা আপনিও এক্সারসাইজ করেছেন, তখন বুঝতে পারেন নাই যে এটা আপনাকে স্বৈরশাসক বানিয়ে দিতে পারে।”

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভালো কথা বলেছেন সংখ্যানুপাতিক একটা প্রতিনিধিত্ব চান। কিন্তু উচ্চকক্ষ বলবার পরও কেন বললেন উচ্চ কক্ষ নিয়ে আরো চিন্তাভাবনা করা হবে। এতদিন ধরে আলাপ আলোচনা করবার পরেও এটা স্থগিত কেন?”

নানা সমালোচনার করলেও এরকম একটা পরিকল্পনা দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদও জানান মান্না।

অন্যদিকে আলোচনা-সমালোচনার ভিত্তিতে ‘ভিশন ২০৩০’ পরে আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করবেন বলে জানান ফখরুল।

এই আলোচনায় অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম,  অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ইসমাইল জবিউল্লাহ, রুহুল আমিন গাজী, সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, রুমিন ফারহানা, কাদের গনি চৌধুরী, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আশরাফ উদ্দিন বকুল অংশ নেন।