কী থাকছে খালেদার রূপকল্পে?

রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কীভাবে দেশ পরিচালনা করতে চায় তার রূপকল্প ‘ভিশন ২০৩০’ নিয়ে বিকালে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন খালেদা জিয়া।

সুমন মাহমুদ প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2017, 05:39 AM
Updated : 10 May 2017, 10:37 AM

বিকাল সাড়ে ৪টায় গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনের বলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।

তিনি বলেন, “ভিশন ২০৩০ হচ্ছে বিএনপির রাষ্ট্রপরিচালনার একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা। বিএনপি কীভাবে দেশকে উন্নয়নের শিখরে এগিয়ে নিতে চায়, রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা কীভাবে ঢেলে সাজাতে চায়, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ কীভাবে সৃষ্টি করা হবে, অর্থনৈতিক সংস্কার কেমন হবে এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ধরন কেমন হবে- সেসব বিষয়ের বিস্তারিত থাকবে এই রূপরেখায়।”

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গত সোমবার এই রূপকল্পে অনুমোদন দেন খালেদা জিয়া।

২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর দুই দফায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে গিয়েও সাফল্য পায়নি খালেদার দল। দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি এখন সংসদের বাইরে।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে পরাজয়ের দায় সরকারকে দিলেও বিভিন্ন সময়ে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে আক্ষেপ শোনা গেছে জ্যেষ্ঠ নেতাদের কথায়।       

বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের ভোটারদের একটি বড় অংশ যেহেতু তরুণ বা যুবা বয়সী, তাদের আকৃষ্ট করার জন্য বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি থাকবে এই রূপকল্পে।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “২০৩০ সালে কীভাবে আমরা দেশকে দেখতে চাই, সেই স্বপ্নটা কীভাবে জাতিকে দেখাতে চাই- সেই বিষয়গুলো এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করব।”

যা যা থাকতে পারে

>> সরকারপ্রধানের ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার পরিকল্পনা।

>> প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে কাজে গতিশীলতা আনা এবং বিচার বিভাগের ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি।

>> শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক উন্নয়ন ও সংস্কারের বিভিন্ন পরিকল্পনা।

>> সংবিধানে গণভোট পুনঃপ্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি।

>> অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো, যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির অঙ্গীকার।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে ‘ভিশন ২০৩০’ এর রূপরেখা দেন ১৯৯১-১৯৯৬ ও ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা খালেদা জিয়া। 

মির্জা ফখরুল বলেছেন, সেটা ছিল ‘আউটলাইন’। এখন পূর্ণাঙ্গ রূপকল্প জাতির সামনে তুলে ধরবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও তার জোটের বাইরে গণফোরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, সিপিবি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল ধানমণ্ডির কার্যালয়ে গেলেও কেউ আমন্ত্রণ কার্ড ‘গ্রহণ করেননি’ বলে দলের দপ্তরের নেতাদের দাবি।

ঢাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাই কমিশনার ও বিশিষ্ট নাগরিকদেরও এ সংবাদ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর ওয়েস্টিনে ‘নির্বাচন কমিশন গঠন এবং শক্তিশালীকরণ: বিএনপির প্রস্তাবাবলী’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন খালেদা জিয়া।

ফেইসবুকে লাইভ

খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার করবে বিএনপি।

দলের চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, দলের কমিউনিকেশন্স বিভাগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন ফেইসবুকে লাইভ করা হবে।

এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনও খালেদা জিয়ার এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান তিনি।