বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্বে প্রধানমন্ত্রী দায়ী: ফখরুল

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2017, 03:13 PM
Updated : 9 May 2017, 03:13 PM

মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে, আমি জানি না আমাদের চিফ জাস্টিস কীভাবে বললেন আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীন নেই।

“উনি তো জানবেন না কারণ, এই আইনের শাসন তিনি ধ্বংস করেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তো তিনিই হরণ করছেন। যে কারণে আজকে বাংলাদেশের কোনো মানুষ শান্তিতে নেই, স্বস্তিতে নেই, তাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই, আইনের শাসন কোথাও নেই।”

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট প্রকাশ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে পাশ কাটানোর অভিযোগ তোলার পর থেকে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। এর মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল এক অনুষ্ঠান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বলেন, ‘‘ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে।”

এর মধ্যেই গত ৩০ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়’ বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে।

এ বিষয়ে সোমবার সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনি বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা …. আমি জানি না আমাদের চিফ জাস্টিস কীভাবে বললেন- আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই।”

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কথায় কথায় রিট। একই মামলায় যদি ৪০-৫০ বার রিট হয় আর যদি সেই রিট নিষ্পন্ন হয় তাহলে স্বাধীনতা নাই কীভাবে? এই একটা দৃষ্টান্তই যথেষ্ট। যারা এর সুযোগ নিচ্ছেন তারাও একসাথে তাল মিলাচ্ছেন আইনের শাসন নেই।”

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, “আজকে আওয়ামী লীগ যা বলবে, সেটাই আইন, আওয়ামী লীগ যা করবে সেটাই আইন, তারা যা বলবে, সেটাই বিচার। এই অবস্থা আমরা কখনও কল্পনা করতে পারি না।”

‌‌‌‌

তিনি বলেন, “আজকে হাওর অঞ্চলে হাহাকার চলছে। সেখানে মানুষের খাবার নেই, ভবিষ্যতে তারা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কী করবে তারা জানে না।

“মোটা চালের দাম এখন ৫০ টাকার কাছাকাছি চলে গেছে। দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। সরকার বলছে চাল আমদানি করছে। পরিষ্কার  আলামত আসছে যে, খাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে। তারপরও কিন্তু তারা বলছে এমন উন্নয়ন হচ্ছে যে, মানুষের আর কিছু প্রয়োজন নাই।”

প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে একজন সাহসী পরীক্ষিত নেতা অভিহিত করে সবাইকে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

আলোচনা সভায় বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি প্রয়াত পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আখতার কল্পনাসহ লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারা বক্তব্য দেন।