জয়পুরহাটে বিএনপির কর্মীসভায় সংঘর্ষে আহত ৫

জয়পুরহাটে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে জেলা বিএনপির কর্মীসভা দুই পক্ষের সংঘর্ষে পণ্ড হয়ে গেছে।

জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2017, 11:07 AM
Updated : 9 May 2017, 02:06 PM

মঙ্গলবার দুপুরের আগে জয়পুরহাট টাউন হলে এ ঘটনায় দুই পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহতদের মধ্যে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন চৌধুরী সেকেন্দার এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পাপন হোসেনকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্মীসভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা সাড়ে ১১টায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সল আলীম এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু সভা শুরুর কিছুক্ষণ আগে দুপক্ষের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সভামঞ্চের চেয়ার-টেবিলসহ মিলনায়তনের বিভিন্ন আসবাব ভাংচুর করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে জয়পুরহাট জেলা বিএনপির একাংশের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সল আলীম। অন্য অংশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক নাফিজুর রহমান পলাশ।

দুই পক্ষই কর্মীসভায় গণ্ডগোলের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছে।

ফয়সল আলীমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের মদদে কিছু সন্ত্রাসী বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতে কর্মীসভায় এই হামলা চালিয়েছে।”

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী বলেন, “কর্মীসভায় হামলাকারীরা বিএনপির কেউ নয়। গোলাম মোস্তফা ও ফয়সল আলীমের ভাড়া করা ওই সন্ত্রাসীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ছত্রছায়ায় কর্মীসভায় হামলা চালিয়েছে।”

জয়পুরহাট সদর থানার ওসি ফরিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মারামারির বিষয়ে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ বা মামলা করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”

কর্মী সভায় আমন্ত্রিত অতিথি বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত এ ঘটনাকে ‘বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের ধারাবাহিক পরিকল্পনার অংশ’ বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “সরকারের অপকর্ম তুলে ধরতে আন্দোলন বেগবান করাসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সারা দেশে কর্মীসভা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার পরিকল্পিতভাবে প্রশাসন ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের দিয়ে বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুল আলম দুদু বলেন, “বিএনপি নিজেদের কোন্দলের কারণে প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘর্ষে  জড়িয়ে সরকারি দল ও প্রশাসনকে দুষছে। এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলকে চাঙা করতে জেলায় জেলায় কর্মী ও প্রতিনিধি সভা করছে বিএনপি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঝিনাইদহ ও মাদারীপুরে সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছে।