‘অপপ্রচারের’ জবাবে সোশাল মিডিয়ায় উন্নয়নের প্রচার চান জয়

‘সরকারবিরোধী অপপ্রচারের’ জবাব দিতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2017, 06:14 AM
Updated : 7 May 2017, 08:54 AM

রোববার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।

জয় বলেন, “আমাদের একটা ধারণা ছিল, কাজ করলেই মানুষ ভোট দিবে। কিন্তু বাস্তব কথা হচ্ছে, আজকাল হচ্ছে প্রচারের যুগ।”

প্রতিদিন সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “পারলে রোজ একটা করে পোস্ট দেবেন। দিনে দুই তিনটা করেও দিতে পারেন। আমরা যেগুলো পোস্ট দেব, সেগুলো শেয়ার করেন। এগুলা কিন্তু ভাইরাল হয়ে যায়।”

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, “জানি, টেকনোলজি ব্যবহার করাটা অনেকের জন্য মাঝেমধ্যে একটু কঠিন হয়, আপনারা চেষ্টা করবেন, আপনাদের যতটুকু সম্ভব আমরা সহযোগিতা করব।

“আর আপনারা যদি কমফোর্টেবল ফিল না করেন, যদি তাও সাহস না পান, আমি অনুরোধ করব, একজন পিএস দিয়ে দেন, যার কাজ থাকবে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়া।”

জয় বলেন, অ্যাকাউন্ট কীভাবে ভেরিফায়েড করাতে হয় তা এমপিদের শিখিয়ে দেওয়া হবে। তখন ওই অ্যাকাউন্ট তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট হয়ে যাবে।

“মানুষের কাছে আমাদের যা বলার, আমাদের পরিশ্রম, এবং আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের মোকাবেলা, এটা আমরা আরও বেশি মানুষের কাছে, আরও বেশি তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে পারব এভাবে।”

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত তিন দিনের ওই কর্মশালার উদ্বোধন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

পঁচাত্তরের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র জয় বলেন, ‘এত কাজ’ করার পরও সরকারকে ‘অপপ্রচার সহ্য করতে’ হয়।

“আমারা দেখলাম ১/১১ এর সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটা প্রচার চালিয়ে গেছে। দুর্নীতি করেছে বিএনপি, সন্ত্রাস করেছে জামাত, তারপরেও বিরোধী দল, বিরোধী দল করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে গেছে।”

বিনামূল্যে মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর কথা তুলে ধরে জয় বলেন, “তার পরও ব্যর্থ হয়েছে ব্যর্থ হয়েছে প্রচার আর অপপ্রচার।”

দলীয় সাংসদদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, “তো শুধু কাজ করলে হবে না। মানুষকে জানিয়ে দিতে হবে আমরা কি করছি। আওয়ামী লীগ কি করছে।”

অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা অস্ত্র হিসাবে উন্নয়নের প্রচারের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে জয় বলেন,

“বিদ্যুৎকেন্দ্র নিজে নিজে হয় না। পদ্মা সেতু নিজে নিজে বানাচ্ছে না। এই কাজগুলোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এটার টাকা যোগাড় করেছি। আওয়ামী লীগ দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এটা বাস্তবায়ন করার জন্য।”

তিনি বলেন, “যারা একটু সিনিয়র আছেন, এরা মানুষের মধ্যে কথা বলতে, নিজেদের ঢোল পেটাতে একটু লজ্জা পান, এটা আমি নিজেদের মধ্যেও দেখি। যারা ফাঁকিবাজ, যারা টাউট তারা লজ্জা পায় না। আমরা যারা সৎ, এরা একটু লজ্জা পাই।”

নির্বাচনে জয় পেতে হলে মানুষের সেবা করে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জয় আওয়ামী লীগের এমপিদের বলেন, “আজকে বাংলাদেশ আর সেই দারিদ্র দেশ নাই। আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়াতে আমাদের দেশের অনেক মানুষ, প্রায় ছয় কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে আওয়ামী লীগের ৫০ জন সংসদ সদস্যেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এই কর্মশালায়। আগামী ৮ ও ৯ মে আরও ১০০ জন সাংসদকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

কীভাবে ফেইসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, ইউটিউবে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা যায়, কনটেন্ট তৈরি ও পোস্ট করে কীভাবে জনগণের সঙ্গে কার্যকর দ্বিমুখী যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়, অনলাইনে কীভাবে উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়, অ্যাকাউন্ট কীভাবে ভেরিফায়েড করা যায়, কীভাবে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়- সেসব বিষয়ে সাংসদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কর্মশালায়।