মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হবে বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন জানিয়েছেন।
এই কর্মসূচি নিয়ে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বক্তব্য দেন।
সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি নিয়ে তাদের মতামত জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ফিজার বলেন, “নিরক্ষরতাম্ক্তু সোনার বাংলা বিনির্মাণ অভিযানকে সফল করতে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বিকল্প নেই।
“আমরা এদেশকে স্বাধীন করেছি, সেটা থাকবে কি না বা কী রকম থাকবে তা নির্ভর করবে তোমাদের উপর। এদেশের মানুষ নিরক্ষর থাকবে কি না সেটা দেখবে তোমরা।
“এত বড় কর্মসূচি এর আগে আর কোনো ছাত্র সংগঠন হাতে নেয়নি। কাজ শুরু কর, দেখবে শেষ হয়ে যাবে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া এত বড় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।”
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “দেশের নিরক্ষর লোকজনকে স্বাক্ষরতা শেখাতে এত বড় পরিসরে নেওয়া এ কর্মসূচি খুবই বিরল। যারা মাঠে কাজ করবে তারা অবশ্যই প্রশংসা পাবে। তোমাদের এই স্বাক্ষরতা অভিযানের মাধ্যমে নিরক্ষর লোকদের অধিকার বাস্তবায়নের সুযোগ মিলবে।”
তিনি বলেন, “এই কর্মসূচির জন্য কোনো বাজেট নেই। আমরা কোনো বাজেট চাই না। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো বাজেট ছিল না। কোনো বাজেট দিয়ে আন্দোলন হয়নি, তেমনি আমাদের এই নিরক্ষরতামুক্তি অভিযান কর্মসূচিতেও কোনো বাজেট নেই।
“তাই সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা এই কর্মসূচিতে কাজ করবে।”
কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরে সাধারণ সম্পাদক জাকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংগঠনের ১০১টি ইউনিট আছে। কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা প্রতিটি ইউনিটের দায়িত্ব আছেন।
তিনি ওই ইউনিট বা জেলায় গিয়ে সেখানকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেবেন।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে একটি ফরম দেওয়া হবে। সেই ফরমে প্রতিটি ওয়ার্ডে বা গ্রামের নিরক্ষর মানুষের তালিকা উঠে আসবে।
“এরপরে ওয়ার্ড কর্মী তার এলাকার নিরক্ষর ব্যক্তির সাথে কথা বলে তার সময় মতো অর্থ্যাৎ সকালে অথবা বিকালে একটি সময় তাদের দেবেন। ওই সময় তাদের অক্ষর শিক্ষা প্রদান করবেন।
“নিরক্ষর মানুষগুলো স্বাক্ষর করতে পারেন, যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে, তারা যাতে নিজের হাতে স্বাক্ষরটা দিতে পারেন।”
জাকির বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরতরা ছুটির দিনে তাদের গ্রামে গিয়ে যেন নিরক্ষর মানুষদের স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন করতে একটু সময় দেয়।
“আশা করি নেতাকর্মীরা আন্তরিকতার সাথে সেই কাজ সম্পূর্ণ করবেন। তাহলে ২০১৭ সালের মধ্যেই দেশের শতভাগ মানুষ স্বাক্ষরতা জ্ঞানসম্পন্ন হবে।”