হাওরে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে: বিএনপি

অসময়ের বন্যায় হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দেখতে বিএনপি নেতারা সুনামগঞ্জে যেতে বাধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2017, 11:43 AM
Updated : 29 April 2017, 10:21 AM

শুক্রবার দুপুরে বিএনপির ঢাকা মহানগরের নবনির্বাচিত দুই কমিটির নেতাদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ অভিযোগ তুলেন ।

বিএনপি চেয়ারপারসনের হাওরাঞ্চলে যাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের ফখরুল বলেন, “বিএনপি চেয়ারপাসন সবখানে গেছেন, যখন দরকার হবে আবারও যাবেন। বিএনপি সবসময় জনগণের পাশেই আছে।”

“এবার ১ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার কথা আছে সুনামগঞ্জে, তার আগে আমাদের কোনো টিমকে সেখানে যেতে দিচ্ছে না।”

যারা বিএনপিকে ‘সভা-সমাবেশ করতে দেয় না’ ‘জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও তাদের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার’ লক্ষ্যে বিএনপির হাওরে যাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে বলে মন্তব্য করেন দলটির মহাসচিব।

এর আগে সকালে ‘আরও আগে কেন প্রধানমন্ত্রী হাওরাঞ্চলে যাননি’ ফখরুল সেই প্রশ্ন তুললে জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেখানে খালেদা জিয়ার না যাওয়ার সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।

জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর আগামী নির্বাচন কীভাবে সেবিষয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট করে বলেছি, নির্বাচনকালীন সময়ে একটি সহায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং একটি লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।

“অন্যথায় এখানে কখনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, বাংলাদেশের জনগণ তা গ্রহণ করে নেবে না।”

বর্তমান সরকারকে ‘অগণতান্ত্রিক’ ও ‘একনায়কতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ফখরুল বলেন, “আমরা বলছি, যে একটা সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছাড়া, পুলিশের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া তারা নির্বাচন করে দেখুক, কারা এদেশে নির্বাচনে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।”

সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলানগরে মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবউন-নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার এবং উত্তরের সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু ও  সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসানকে নিয়ে নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব প্রয়াত নেতার কবরে ফুল দেন।

উত্তরের নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম আত্মগোপন আছেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন ‍টুকু, শফিউল বারী বাবু ও আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলসহ মহানগরের নবনির্বাচিত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নতুন কমিটির সাথে আসা কয়েক হাজার নেতা-কর্মী প্রয়াত নেতার আত্মার শান্তির কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন। নেতা-কর্মীরা দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বড় বড় প্রতিকৃতির পাশাপাশি মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল ও উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুমের রঙিন পোস্টারসহ মিছিল নিয়ে কবর প্রাঙ্গণে আসে।

গত ১৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ঢাকা দক্ষিণের ৭০ সদস্যের এবং উত্তরের ৬৪ সদস্যের এই আংশিক কমিটি অনুমোদন করে বিএনপি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণে সাদেক হোসেন খোকা ও আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন মহানগর কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর ওই বছর ১৮ জুলাই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ৫২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

মহানগরে কমিটি নিয়ে বিভক্তি আছে কিনা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “কমিটি নিয়ে বির্তক কিছু নেই। আমাদের সিনিয়র লিডারদের নেতৃত্বে মহানগরের নতুন কমিটি গঠন হয়েছে, তারা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।

“আমরা আশাবাদী নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত এই দুইটি কমিটি আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে আরো বেগবান করবেন।”