তিস্তা নিয়ে মস্করা করছে ভারত: গয়েশ্বর

তিস্তার নদীর পানির হিস্যা নিয়ে ভারত ‘মস্করা’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 02:15 PM
Updated : 26 April 2017, 02:19 PM

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীতে এক স্মরণসভায় তিনি বলেন, “তিস্তায় পানি নাই। মমতা আজকে আবার বলেছেন আত্রাই নদীর ব্যারেজ খুলে দিতে। উজানের দেশ কিনা ভাটির দেশকে বলে আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে দাও, আমাকে পানি দাও- এ কোন আবদার!

“আমি বলব, মমতা ব্যানার্জির এই আবদার বাংলাদেশের জন্য একটি মশকরা।  আমি এর তীব্র প্রতিবাদ করি এবং মমতা ব্যানার্জিকে বলব, তিস্তার পানির চুক্তি বা পানি সরবারহের ক্ষেত্রে আপনার বাঁধা প্রত্যাহার করুন।”

২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তা নিয়ে চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও সেবার মমতার আপত্তিতে তা আটকে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত চুক্তি হয়নি।

মাঝে ভারতে ক্ষমতার পালাবদলের পর বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ২০১৫ সালে ঢাকা সফরে এলেও সেই জট খোলেনি। আশ্বাস দিয়েই বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে হয়নি তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি।

তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বরাবরই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের আপত্তিকে বাধা হিসেবে দেখিয়ে আসছে। এনিয়ে বিজেপিবিরোধী নেত্রী মমতার সঙ্গে তাদের কোনো আলোচনাই ফলপ্রসূ হয়নি।

তবে বিজিপি-মমতা বিরোধের বিষয় সামনে আনার ঘটনা বাংলাদেশকে তাদের ন্যায্য পানি না দেওয়ার জন্য ভারতের কৌশলী আচরণ হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র।

তিনি বলেন, “মমতা ও মোদী সব একই। একজন আরেকজনকে ধইরা পাঠ (অভিনয়) করায়; অর্থাৎ দিল্লী বলে মমতা রে, তুমি বাধা দাও, তাহলে শেষ। কোনো প্রভিন্সের আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার আইনগত ও সাংবিধানিক কোনো অধিকার ভারতে নেই। সুতরাং খেলা রাম খেলে যা।

“ভারত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রদেশের অজুহাত দিয়ে বাংলাদেশের ন্যায্য পাওয়া, ন্যায্য অধিকার থেকে চিরায়ত অগ্রাহ্য করে আসছে, ভবিষ্যতেও করবে। সেকারণে বাংলাদেশের জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা আমাদের অধিকার আদায় কিভাবে করব।”

চাঁদপুরের সাবেক সাংসদ আলমগীর হায়দার খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ওই স্মরণসভার আয়োজন করে ‘আলমগীর হায়দার খান স্মৃতি সংসদ’।

এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকে ব্যর্থ অভিহিত করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, “আমরা ছোট দেশ, আমরা সব কিছু উজাড় করে তাদেরকে দেব। তারা বড় দেশ, আমাদের দিকে তাকাবে না।

“এই হল শেখ হাসিনার বন্ধুত্ব; বন্ধুত্বের নামে দাসত্ব লিখে দিয়ে তিনি দাসীর পর্যায়ে গেছেন। ভারতের কাছে সরিষা ইলিশ খাওয়াতে গিয়ে, ভারতবাসীকে ভুলাতে গিয়ে, নিজেই ভুলে আঁচল খুলে সব দিয়ে আসলেন, নিয়ে আসতে পারলেন না বাংলাদেশে কিছুই।”

দেশ ও দলের প্রতি প্রয়াত নেতা আলমগীর হায়দার খানের আনুগত্য এবং তার জীবনযাপন তুলে ধরেন গয়েশ্বর।

সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোতাহার হোসেন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক এসএম মিজানুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, প্রয়াত নেতার দুই মেয়ে ইশরাত হায়দার খান নিশি, মুশরাত হায়দার খান মৌ ও ছেলে নুসরাত হায়দার খান ত্বীপসহ চাঁদপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।