এতিমখানা দুর্নীতি: ফের আদালত বদলে হাই কোর্টে আবেদন খালেদার

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থার আবেদন বিশেষ জজ আদালতে নাকচ হওয়ার পর ফের আদালত পরিবর্তনের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 08:13 AM
Updated : 26 April 2017, 08:13 AM

তার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া বুধবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন জমা দেন।

জরুরি অবস্থার সময় দুদকের দায়ের করা এই মামলা ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।

ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার আগে এ মামলার বিচারের দায়িত্বে থাকলেও খালেদার অনাস্থার আবেদনে হাই কোর্ট গত ৮ মার্চ বিচারক বদলে কামরুল হোসেন মোল্লাকে দায়িত্ব দেয়।

খালেদার আইনজীবী জাকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মামলার এখন যিনি বিচারক, তিনি ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুদকের আইন শাখার পরিচালক ছিলেন। এ মামলার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি দুদককে মতামত দিয়েছেন। সুতরাং তার কাছে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করেন না।”

সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে কোনো একটি নিয়মিত বেঞ্চে খালেদার আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানান এই আইনজীবী।

খালেদা জিয়া গত ১৩ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থনের নির্ধারিত দিনে জজ আদালতে হাজির হলে তার আইনজীবীরা একই যুক্তি দেখিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেন।

ওই আবেদন নাকচ করে বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা সেদিন বলেন, “এসব কথা আমাকে বলছেন কেন। হাই কোর্টের আদেশে আমি এই মামলার বিচারকের দায়িত্ব পেয়েছি। আপনাদের কথাতেই হাই কোর্ট এই মামলার বিচারের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে।”

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে দুদক ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

আসামিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন দেশের বাইরে।

এছাড়া সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

এ মামলায় আসামির আত্মপক্ষ শুনানি পর্যায়ে খালেদার পুনঃতদন্তের আবেদন আদালত নাকচ করলে গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানান।

খালেদা জিয়ার অনাস্থার আবেদনে ৮ মার্চ হাই কোর্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজকে (মহানগর দায়রা জজ) মামলাটির বিচারের দায়িত্ব দিয়ে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।