রাডার দুর্নীতি: এরশাদের ভাগ্য জানা যাবে বুধবার

বিমানের রাডার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে ২৫ বছর আগের এক মামলার রায় হবে বুধবার।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 03:25 AM
Updated : 19 April 2017, 03:40 AM

দুদকের করা এই মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের সাজা হবে কি না- দুপুরে সেই সিদ্ধান্ত দেবেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।

মামলার বাদী ও বিবাদী পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৮ এপ্রিল তিনি রায়ের এ দিন ঠিক করে দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের শীর্ষ কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান ও মীর আহমেদ আলী সালাম এবং এরশাদের পক্ষে শামসুদ্দিন বাবুল, শেখ সিরাজুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন শুনানিতে অংশ নেন।

১৯৯২ সালে দায়ের করা এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ৩৮ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নিম্ন আদালতে মামলাটি যুক্তিতর্ক পর্যায়ে যায়। এ অবস্থায় গত বছর নভেম্বরে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিতে করা আবেদন বিচারিক আদালতে খারিজ হলে উচ্চ আদালতে যায় দুদক।

এ বিষয়ে শুনানি করে হাই কোর্ট গত ২৪ নভেম্বর আদেশে বলে, যে সাক্ষীদের বক্তব্য শোনা হয়নি, তা শেষে করে ৩১ মার্চের মধ্যে এ মামলার বিচার শেষ করতে হবে।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এ মামলার আরেক আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি হাই কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দেয়।

দুদক ওই আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও তা ধোপে টেকেনি। ফলে গত ২৮ মার্চ বিচারিক আদালতে ফের এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান দুদকের নিম্ন আদালতের অন্যতম কৌঁসুলি মীর আহমেদ আলী সালাম।

১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে।

ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির ‘অত্যাধুনিক’ রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ওয়েস্টিন হাউজের রাডার কিনে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।

তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ অগাস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে।

আইনি বাধা কাটলে মামলা হওয়ার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৪ সালের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দেন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ।

সেদিন অন্য দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। অন্য আসামি এ কে এম মুসা শুরু থেকেই পলাতক।