আওয়ামী লীগের নীতি বদলের শঙ্কায় জাসদ

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে ‘আপসের’ পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক নীতি বদলের শঙ্কা প্রকাশ করেছে তাদের জোটসঙ্গী দল জাসদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2017, 05:30 PM
Updated : 13 April 2017, 05:30 PM

ভাস্কর্য অপসারণ ও কওমি মাদ্রাসার সদনদের স্বীকৃতি ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান নেতৃত্বাধীন জাসদ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “ক্ষমতার রাজনীতিতে কৌশলের নামে সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপস-আঁতাত দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে নীতি হিসেবে সাম্প্রদায়িকতাকে গ্রহণ করার ইতিহাস এ উপমহাদেশের রাজনীতিতে বিরল নয়।”

মঙ্গলবার হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একদল ওলামার সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ এবং কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমান মর্যাদা দেওয়া ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর এই পদক্ষেপ সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপস হিসেবে দেখেছে তাদের জোটসঙ্গী দলেরই অনেকে নেতা। তবে এটা আপস বলে মানতে নারাজ ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সরকারের পদক্ষেপে অসন্তোষ জানিয়ে হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদের বিবৃতির পর অন্য অংশের নেতাদের কাছ থেকে আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া এল।

শাহ আহমদ শফীদের সঙ্গে এই বৈঠকেই কওমির সনদকে স্নাতকোত্তর মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী

 

আম্বিয়া ও প্রধান বিবৃতিতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহ আহমদ শফীকে গণভবনে ডেকে এনে তাদের ‘অযৌক্তিক দাবির প্রতি মাথা নত করেছেন’।

“কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি, হাই কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের পক্ষে মত প্রদানের কারণে মৌলবাদীরা আস্কারা পেয়ে নববর্ষ কর্মসূচির বিরুদ্ধে বক্তৃতা বিবৃতি সহ নানা ঘৃন্য ঘটনা ঘটিয়েছে।”

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের প্রধান নেতার কাছ থেকে ‘একটি ভুল বার্তা পাওয়া চরম লজ্জার’ বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়।

বিবৃতিতে জাসদ নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ ‘ভুল সংশোধন’ করে ভাস্কর্য অপসারণ এবং সাম্প্রদায়িক শিক্ষাকে প্রশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।

জাসদের এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরই কওমির সনদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি গেজেট প্রকাশ হয়েছে। সনদ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে কমিটি করা হয়েছে, তার প্রধান করা হয়েছে শাহ আহমদ শফীকে।